![](https://www.ukhiyanews.com/wp-content/uploads/22472_me.jpg)
তৃতীয় ধাপের উখিয়া উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৪ জন প্রার্থী থাকলেও লড়াই হবে ১২ জনের মধ্যে। এজন্য পুরো উপজেলাতেই উৎসবের আমেজে প্রচারণা চালাচ্ছে প্রার্থী ও সমর্থকরা। জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, আগামী ১১ নভেম্বর উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং, রত্নাপালং, জালিয়াপালং, রাজাপালং ও পালংখালী ইউপি’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যানপদে ৩৪ জন প্রার্থী লড়ছেন। তার মধ্যে ৫ জন নৌকা প্রতীক ও ৫ জন হাতপাখা প্রতীক নিয়ে এবং বাকিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, দলীয় শৃঙ্খলার অভাবে ও পছন্দের প্রার্থী প্রতীক না পাওয়ায় উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা থেকে এখনো নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছেন। ফলে বেকায়দায় রয়েছেন নৌকার মাঝিরা।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা বেশ এগিয়ে রয়েছেন। এদিকে সরেজমিনে ৫ টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর উপজেলা।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে নানাভাবে প্রচার প্রচারণা। মাইকিং, সভা সমাবেশ পথসভা ছাড়াও নারী পুরুষরা আলাদা আলাদাভাবে ঘরে ঘরে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচরণা চালাচ্ছে। সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবের আমেজেই চলছে প্রচার। ভোটাররাও অধীর আগ্রহে ১১ নভেম্বরের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে তাদের মনে শংকা রয়েছে সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কিনা সেদিন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলদিয়া পালং ইউপিতে চেয়ারম্যানপদে ৯ জন প্রার্থী লড়লেও মূল প্রতিদ্বন্দিতা হবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা ইমরুল কায়েস চৌধুরী , স্বত্রন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক আমীন ও নৌকার মাঝি অধ্যক্ষ শাহ আলমের মধ্যে। তবে ওই ইউনিয়েনের একাধিক সদস্য প্রার্থী , স্কুল শিক্ষক ও রাজনৈতিক নেতারা বলেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমের ছোট ভাই বলেই অধ্যক্ষ শাহ আলম বারবার নৌকা প্রতীক পান। তাঁর জনপ্রিয়তা নেই।
এছাড়া তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় প্রায়ই সময় বেফাস, লাগামহীন কথাবার্তা বলে নিজের অবস্থানকে আরো খারাপ করছেন। ফলে এই ইউনিয়নে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইমরুল কায়েস চৌধুরী ও আমিনুল হক আমিনের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দিতা হবে। পালংখালিতে চেয়ারম্যানে পদে ৬জন থাকলেও লড়াই হবে বিএনপি সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরীর সাথে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের জুয়েলের ।
এবিষয়ে ওই ইউপির একাধিক সদস্য ও নারী সদস্য প্রার্থী ও সচেতন ভোটাররা বলেন, উপজেলার সবেচেয়ে বেকায়দায় রয়েছে এই ইউপি’র নৌকার মাঝি এম. এ মঞ্জুর । তার বিরুদ্ধে রয়েছে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা জুয়েল ও কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ।
জালিয়াপালং ইউনিয়নের ১০ জন প্রার্থী থাকলেও প্রতিদ্বন্দিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসাইন এবং আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম ছৈয়দ আলম। রত্নাপালং ইউনিয়নে ৫ জন প্রার্থী থাকলেও লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ও জামাত নেতা নুরুল কবির চৌধুরীর সাথে আওয়ামীলীগ প্রার্থী নুরুল হুদার মধ্যে। রাজাপালং ইউনিয়নে ৪ জন প্রার্থী থাকলেও লড়াইয়ে থাকবেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও আওয়ামীলীগ মনোনীত জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর সাথে জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর ভ্রাতস্পুত্র সাদমান জামির মধ্যে।
এদিকে উপজেলার ৫ টি ইউপির প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্য ও মহিলা সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দীতাকারী সহ স্থানীয় গনমাণ্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সুষ্ঠু অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যদি ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তবে এবারের নির্বাচণের হলদিয়া পালং, জালিয়াপালং ও পালংখালিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এগিয়ে থাকবে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের অনেক ইউপিতেই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছি। কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসাইন বলেন, উখিয়া উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ওশান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা যাতে উৎসবের আমেজে ভোট দিতে পারে সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত