![](https://www.ukhiyanews.com/wp-content/uploads/2017/08/received_1908824082776795.jpg)
বিশেষ প্রতিবেদক:;
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুল ইসলাম ফয়েজকে ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। এসময় তার ৩ সহযোগী মোটর বাইক পেলে পালিয়ে যায়। পেলে যাওয়া নাম্বাবিহীন দুইটি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
উখিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, ১৫ অগষ্ট মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কুতুপালং এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। অভিযানকালে ফয়েজের আরো ৩ সহযোগি পালিয়ে যায়। আটক যুবলীগ নেতা ফয়েজুল ইসলাম পালংখালী মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা নলবনিয়া গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র। তার বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ইয়াবা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ একাদিক মামলা রয়েছে।
সে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি থাকাকালে ইয়াবাসহ নানা অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে বলে স্থানীয় একাদিক সূত্র জানিয়েছে। সীমান্তের নিকটবর্তী বাড়ি হওয়ার সুযোগে ফয়েজ দীর্ঘ সময়ধরে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত। তার রয়েছে শক্তিশালী ইয়াবা সিন্ডিকেট।
অনুসন্দানে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী পালংখালী, নলবনিয়া এলাকার ফয়েজ তার পিতা মৃত সিরাজুল ইসলাম পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি থাকাকালিন সময় থেকে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অবৈধ মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। হাইস্কুলের গন্ডি পার হতে না পারা ফয়েজ হয়েছে পালংখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। পরে ধারাবাহিকভাবে হয়েছে যুবলীগ সাধারন সম্পাদক। আওয়ামী ঘরনায় জন্ম নেওয়া ফয়েজ গত ইউপি নিবার্চনে নৌকা মার্কার প্রার্থীর বিরুধীতা করায় দল থেকে বহিষ্কারও হয়েছিল। দুই মাসের মাথায় ইয়াবার কালো টাকার বিনিময়ে পুনরায় স্বপদে বহাল হয়েছে। তার পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ইয়াবা ডন ফয়েজকে। দলের পদপদবী ব্যবহার করে ইয়াবা ও সীমান্তের মাদকদ্রব্যের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে কামিয়েছে কোটি কোটি টাকা। এভাবে উত্তান হয়ে ইয়াবার গড়ফাদারে পরিনত হওয়া ফয়েজের সাথে সখ্যতা রয়েছে জেলা ও উপজেলার ক্ষমতাশীন দলের শীর্ষ কয়েকডজন নেতার।
সূত্রে জানা গেছে ফয়েজের পিতা মৃত সিরাজুল ইসলামের দুই স্ত্রীর মধ্যে প্রথম স্ত্রী তথা ফয়েজের মা,র পিতার বাড়ি পাশ^বর্তী মিয়ানমারের কুয়ানচিবং এলাকায়। তার মামা বি রহমান প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে আসা যাওয়া করে তাকে। তাদের ঐ এলাকায় রয়েছে দুইটি ইয়াবার কারখানা। ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ইয়াবার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত মামা-ভাগীনা সিন্ডিকেট। তাদের সাথে রয়েছে মিয়ানমারের একই এলাকার সিরাজুল ইসলাম (প্রকাশ চিক্ইুন্যা) নামের এক ব্যক্তি। চিকুইন্যা ফয়েজের অন্যতম সহযোগী হিসাবে সীমান্তে মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আর ফয়েজ সীমান্তের বিজিবিকে নিয়ন্ত্রণ করত বলে জানা গেছে। ফয়েজ বাংলাদেশে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ইয়াবা সর্বরাহ করত।
আটক ইয়াবা গুলো ১৫ আগষ্ট জাতিয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে কক্সবাজার নিয়ে যাচ্ছিল ফয়েজ ও তার ৩ সহযোগীরা। গোপন সংবাদ পেয়ে উখিয়া থানা পুলিশের এস আই আলমগীরের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গড়ফার ফয়েজকে ২০ হাজার ইয়াবা ও দুইটি মোটর বাইকসহ আটক করতে সক্ষম হলেও ৩ সহযোগি পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সহযোগিরা হলো পালংখালী বাজার এলাকা মোঃ আফালাতুন প্রকাশ (ধন্যার) পুত্র বহু মাদকদ্রব্য মামলা ও সাম্প্রতিক পালংখালীতে ইয়াবার টাকা ভাগাভাগী নিয়ে গোলা গুলির ঘটনার আসামী রাসেল উদ্দিন, পশ্চিম পালংখালী এলাকার আবদুল মান্নানের পুত্র পালংখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ জোনাইদ, ফারির বিল এলাকার আয়ুবুল ইসলামের পুত্র যুবলীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম বলে উখিয়া থানা সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মুজিবুল হক আজাদ ও সাধারন সম্পাদক ইমাম হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ফয়েজ ইয়াবাসহ আটকের ঘটনা শুনেছি। জাতীয়শোক দিবসের কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকার কারনে এখনও সাংগঠনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে জেলায় এব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে।
উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়ের ফয়েজুল ইসলাম ফয়েজকে আটকের সংবাদ নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুইটি মোটর সাইকেলে করে ফয়েজসহ আরো তিনজন ইয়াবার একটি চালান পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। গোপন সংবাদ পেয়ে তাদের মোটর ও শরীরে তল্লাসি চালিয়ে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ফয়েজকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আরো তিন সহযোগি পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে, তাদের ব্যবহারের মোটর সাইকেল দুইটি জব্দ করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মাদকদ্রব্য আইনে মামলা পক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
পাঠকের মতামত