অপবাদ সইতে না পেরে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।বৃহস্পতিবার রাতে হীরামনি তিশার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তিশা (১৫) ভাঙ্গা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল। সে উপজেলার আলগী ইউনিয়নের শাহমুল্লগী গ্রামের ফল ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান ভূইয়ার মেয়ে।
পুলিশ জানায়, নিজ স্কুলের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের স্ত্রীর দেওয়া অপবাদের জেরেই তিশা গলায় ফাঁস দেয়।
ভাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিরাজ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বাসায় গিয়ে তিশাকে প্রাইভেট পড়াতেন। বৃহস্পতিবার বিকেলেও তিনি পড়াতে ছাত্রীর বাসায় যান। কিছুক্ষণ পরে শিক্ষকের স্ত্রী মাহামুদা আক্তার সেখানে গিয়ে স্বামী ও ছাত্রীকে জড়িয়ে অপবাদ দেন ও গালাগাল করেন। তিশার মাকেও গালাগাল করেন তিনি। এর পরই তিশা তার রুমের দরজা আটকে বিছানার চাদর দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়। পরে দরজা ভেঙে তিশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে দ্রুত ভাঙ্গা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর শিক্ষক ও তার স্ত্রী গা-ঢাকা দিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তিশার মা হাওয়া বিবি বাদী হয়ে শিক্ষক ও তার স্ত্রী মাহামুদা আক্তারের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন।
তিশার বাবা মনিরুজ্জামান বলেন, আমার মেয়ের আত্মহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিচার চাই। তিশা বিদ্যালয়ে সবসময় প্রথম স্থান অধিকার করত। এখন আমার জীবনের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।
আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাউসার আলী বলেন, এমন একজন মেধাবী ছাত্রীর মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করছি।
ভাঙ্গা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মো. হায়দার হোসেন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষক আজাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কারসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাঙ্গা থানার এসআই পীযূষ জানান, শিক্ষক আজাদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পাঠকের মতামত