প্রকাশিত: ০২/০৫/২০১৯ ১০:০৩ পিএম
রামুতে গৌতম বুদ্ধের একটি বিশাল মূর্তি

প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু:
গত কয়েক দিন ধরে ভাবছি জনগুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে একটু লিখব। এ বিষয়ে এক কদম এগোলে দুকদম পিছু হটে যাচ্ছিলাম বার বার। জানিনা বিষয়টিকে কে কিভাবে নেন। বিষয়টি হল, সতর্কতা অবলম্বনের আহবান সম্পর্কিত। পরিস্থিতি মোতাবেক আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতেই হচ্ছে।

বিভিন্ন কারণে বর্তমান সময়ে পৃথিবীর দেশে দেশে যেসব সন্ত্রাসী এবং আত্মঘাতী ঘটনা ঘটছে এরকম ঘটনা যে এখানে ঘটবেনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা আপাতত বিপদমুক্ত আছি কিন্তু কেউ ঝুঁকিমুক্ত নই। এই ঝুঁকি পুরো রাষ্ট্রের জন্য আছে। দেশে যেকোন সময়, যেকোন স্থানে এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটে যেতে পারে। সাম্প্রতিককালের পারিপার্শ্বিকতা পর্যালোচনা করলে এটাই বোধে আসে।

সরকার কিংবা আইন-শৃংখলা বাহিনীগুলো নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রতিনিয়ত সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু সামাজিক এই ব্যাধি কিংবা অভিশাপ থেকে নিরাপদ থাকতে হলে সরকার, আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরতার পাশাপাশি প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা।

এমতাবস্থায় বিশেষ করে বৌদ্ধ বিহারগুলো সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করছি। আমি আপাতত ব্যাখ্যা দিতে যাচ্ছিনা। শুধু বিনীত অনুরোধ জানাব যে,

ক্স যেসকল বৌদ্ধ বিহারে জনসমাগম বেশি, পর্যটকের আনাগোনা বেশি, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় অবস্থিত এবং সম্পূর্ণ অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আছে সেসব স্থানে প্রশাসনিক নজরদারী এবং তৎপরতা বাড়াতে হবে।
ক্স একইসাথে বিহার কর্তৃপক্ষগুলোকেও আরো দায়িত্বশীল হতে হবে এবং পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ক্স বিহারের মূল ফটকে/গেইটে লোক রেখে আগতদের বিশেষ করে অপরিচিত এবং যারা সাথে করে ব্যাগ নিয়ে আসেন এবং সন্দেহভাজন তাদেরকে শিষ্টাচার এবং সম্মান বজায় রেখে যাচাই-বাছাই করে বিহারে প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।
ক্স কাউকে কোনো ধরণের সন্দেহ হলে সাথে সাথে স্থানীয় প্রশাসনকে জানান। প্রয়োজনে আমাদেরকেও জানাতে পারেন।
ক্স কোন বিহারে কোন অপরিচিত বৌদ্ধ ভিক্ষু-শ্রামণ কে বিহারে প্রবেশ কিংবা অবস্থান করার সুযোগ দেওয়ার আগে তার সম্পর্কে পরিপূর্ণ ভাবে অবগত হউন।

ক্স কক্সবাজার জেলায় কিংবা পুরো দেশে যেসকল বিহারে আগে থেকে পুলিশ অবস্থান করছেন তাদের সাথে সমন্বয় করে বিহারের মূল ফটকে/গেইটে তল্লাশীর কাজে পুলিশ রাখার ব্যবস্থা নিতে পারেন। তবে নিজেদের লোকদের দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশকে অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে।

আমার এই লেখাটি যারা পড়বেন আশা করি প্রচারিত এই বিষয়টির প্রাসঙ্গিকতা কিংবা ভুল-ত্রুটির দিকে বেশি নজর না দিয়ে দয়া করে কেবল আকুতিটাকে বুঝার চেষ্টা করবেন এবং সার্বিক পরিস্থিতিটা বুঝার চেষ্টা করবেন।

আমরা সুস্পষ্ট করে বলতে চাই যে, বৌদ্ধ বিহার গুলোতে সম্মানীত পর্যটকের আগমণ এটা আজকের কিংবা এসময়ের বিষয় নয়, আবহমান কাল থেকেই এটা হয়ে আসছে। সেই আবহমান কাল থেকে বৌদ্ধ বিহারগুলো সম্মানীত পর্যটকদের পদভারে মূখরিত থাকে। এটা আমাদের গৌরব, আমাদের আনন্দ। তবে পাল্টেছে কেবল সময় কিংবা পরিস্থিতিটা। আমরাও এখন পরিস্থিতির শিকার। এই সিদ্ধান্ত সম্মানীত পর্যটকদের পর্যটনে বাধাবিঘœ সৃষ্টি করার জন্য নয়, সবার হিতের জন্য। আশা করি আমরা সবার সুদৃষ্টি এবং সহযোগিতা পাব।

প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু:
সভাপতি, কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পষিদ।

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...