ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২০/০৪/২০২৪ ৯:১৯ এএম

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হকের হাতে টাকা ধরিয়ে দিলেই মিলছে পাহাড় কাটার অনুমতি। এতে গত ছয় মাসে বারবাকিয়া, শিলখালী ও টইটং এলাকার প্রায় ৮-১০টি পাহাড়-টিলা বিলীন হওয়ার পথে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত দুই মাসের মধ্যে টইটং ইউনিয়নের ডেনারছড়া, রমিজপাড়া ও বটতলী জুমপাড়ায় চারটি পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে দিয়েছে স্থানীয় মো. সোহেল, আবু ছালেক, আকতার, গিয়াস উদ্দিন ও ফারুকের নেতৃত্বে একটি চক্র।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড় নিধনের জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে হয় রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হককে।
এ ব্যাপারে টইটং ইউনিয়নের বাসিন্দা মোশারফ আকতার বলেন, ডেনারছড়া, রমিজপাড়া ও বটতলী জুমপাড়া পাহাড়গুলো কাটার জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তাকে নিয়মিত টাকা দিয়ে আসছে আবদু শুক্কুর ও কাজল সওদাগরের নেতৃত্বে একটি সিণ্ডিকেট। রেঞ্জার এসব অবৈধ লেনদেন করে থাকেন টইটং বিট কর্মকর্তা জমির উদ্দিনের মাধ্যমে। আর পাহাড়খেকোরা টাকা দেওয়া বন্ধ করলে বন্ধ থাকে তাঁদের কার্যক্রম। আবার টাকা দেওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় পাহাড়ের উপর ধ্বংস যজ্ঞ।

এদিকে টইটং ইউনিয়নের মতো শিলখালীর জারুলবনিয়া, নাপিতেরচিতা, সবুজ পাড়া, সাপেরঘারা, মাঝেরঘোনা, তারাবনিয়া, বারবাকিয়ার লম্বামোড়া, ভারুয়াখালী, পাহাড়িয়াখালী ও চাকমার ঢুরি এলাকার পাহাড়ও কেটে সমতলের সাথে মিশিয়ে দিয়েছে পাহাড়খেকো চক্র। এ চক্র রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবকে টাকা দিয়েই পাহাড়ের মাটি বিক্রি করেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
শিলখালীর জারুলবনিয়ার উত্তর জুম, দক্ষিণ জুম ও সাপেরঘারা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি পাহাড় কেটে লাল মাটি পাচার করে দেওয়া হয়েছে। স্কেভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি আর ৫-৬টি ডাম্পার গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে মাটি। এভাবে চলছে প্রতিযোগিতা দিয়ে পাহাড় কাটা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, কিছুদিন আগে শিলখালী জারুলবনিয়া দক্ষিন জুম এলাকায় জয়নাল আবেদীন, উত্তর জুমে নুরুল আবছার মাঝেরঘোনা এলাকায় ছাদেক, তারাবনিয়ায় আবদুল হক, সবুজ পাড়ায় জাহাঙ্গীর ও সাপেরগারা এলাকায় আলী হোছাইন পাহাড়গুলো কাটা শুরু করে। আমরা বারণ করলেও তাঁরা কথা শুনেনা। পরে জানতে পারি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে তাঁরা পাহাড় কাটা শুরু করেছে।

শিলখালী মাঝেরঘোনা এলাকায় ছাদেক নামের এক ব্যক্তি, তারাবনিয়া পাড়ায় আবদুল হক, সবুজপাড়ায় জাহাঙ্গীর, বারবাকিয়া ভারুয়াখালী এলাকায় কবির আহমদ, টইটং বনকানন বাজারের উত্তর পাশে জামাল হোসেন, দক্ষিণ পাশে প্রবাসি আবদু শুক্কর ও চেপ্টামুরা এলাকায় কাজল সওদাগর, পাহাড়িয়াখালী এলাকায় মইদুর রহমান পাহাড় কেটে নিধন করেছে। তারা সকলেই রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে করেছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হকের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোশারফ হোসেন বলেন, বিষয়টি চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের কর্মকর্তাদের তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হবে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বাদী এখন কক্সবাজার দুদকের উপ-পরিচালক

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ...

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...