
বিজয় মেলার নামে চকরিয়া ও পেকুয়ার ৪টি স্থানে লটারীর নামে জুয়া, সার্কাসের নামে উলঙ্গ নৃত্যের মহোৎসব চলছে। এতে স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ লোকজন প্রতিরাতেই বিজয় মেলার চলা জুয়া ও অশ্লীল নৃত্যে অংশ গ্রহন করতে গিয়ে ফতুর হয়ে যাচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায় চুরি-চামারী ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার বেড়েই যাচ্ছে।
সুত্রে মতে শাসক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বিজয় মেলার অনুমতি নিয়ে এসব কুকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিয্গো করেছে এলাকার সচেতন মহল। গতকদিন ধরে পেকুয়া সদর, চকরিয়ার বরইতরী, কোণাখালী ও ডুলাহাজারায় চলছে এসব মেলা।
এতে উঠতি বয়সের সব স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী ও গ্রাম্য যুবকসহ দূর-দূরান্তের বিকৃত মানসিকতার মানুষের উপচেপড়া ভীড় সেখানে মোহিত করে রেখেছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও প্রবেশধারে এধরণের বিজয় মেলা দেখে বিরক্ত প্রকাশ করে ফিরে যাচ্ছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারস্থ বঙ্গবন্দু সাফারী পার্কের পাশে বিজয় মেলার আয়োজন করে । এখানে প্রতিদিন লটারীর নামে পুরো চকরিয়ায় মাইকিং করে ২০টাকা টিকেট বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পক্ষান্তরে নামে মাত্র পুরু¯কার দিচ্ছে বিজয়ীদের মাঝে।
এছাড়া রাত ৯টার পর থেকে সার্কাসের নামে রাত ব্যাপি চলে অখ্যাত শিল্পীদের উলঙ্গ নৃত্য। তবে জেলা প্রশাসনের দেয়া শর্তগুলো মানছেনা আয়োজকেরা। এরপরও স্থানীয় প্রশাসন এসব দেখেও রহস্যজনক কারণে না দেখার ভান করে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আয়োজক দাবী করেছেন, শুধু বিজয় মেলা করলে এখানে কোন দর্শক আসবে না। তাই দর্শনার্থীদের বিনোদনের সার্থে টুকটাক নৃত্যের আয়োজন করতে হচ্ছে। এছাড়া বিজয় মেলার ব্যয় ও এসব মেলার কাছে ব্যয় করা পুজি উদ্ধার করতে র্যাফেল ড্রয়ের নামে জুয়ার আসর বসাতে হয়েছে। এ খ্যাতে আয়ের বিশাল একটি অংশ সকল স্থরের দায়িত্বশীলদের ঘাটে ঘাটে বিলি করতে হচ্ছে। এমনকি এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের খবর প্রচার ও প্রকাশ না করার জন্যে মিডিয়া কর্মীদেরকেও ম্যানেজ করা হচ্ছে। স্থানীয় অধিবাসীদের অভিয্গো কয়দিন পরেই এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার অনুষ্টিত হবে। বিজয় মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত এসব অশ্লীল কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্ক সংলগ্ন এলাকার একজন সচেতন ব্যক্তি দাবী করেছেন, মেলা অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া এবং মেলার মাইকের বিকট শব্দ দুষণে অতিষ্ট জনগোষ্টি রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পাচ্ছনা। এছাড়াও পার্ক এলাকায় গড়ে উঠা গেষ্ট হাউস গুলোতে চলছে পতিতা বানিজ্য।
উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তার শাহেদুল ইসলাম ও পুলিশের বিরামহীন অভিযানের পর গেষ্ট হাউস গুলোতে অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে গেলেও বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে পুনরায় এসব অপকর্ম চলছে বিনা বাধায়। স্থানীয় লোকজন অতিষ্ট হয়ে উঠলেও বিজয় মেলার নাম জড়িত থাকায় মামলার ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
এদিকে প্রবীন আওয়ামীলীগের একজন ত্যাগি নেতা সংগত কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামীলীগের সুদিনে মৌসুমী পাখীদের অভাব হচ্ছে না। তারা নিজেদের আখের গোছানোর নামে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে। একারণে দলের ভাবমুর্তি কোথায় গিয়ে দাড়াচ্ছে তা দলের বর্তমান কান্ডারীরা দেখেও দেখছে না। অথচ এসব অপকর্মের অর্থ যোগান দিতে গিয়ে উঠতি বয়সের যুব সমাজ চুরি-চামারীসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে।
পাঠকের মতামত