প্রকাশিত: ০৫/১১/২০১৮ ৮:১৬ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
ঝটিকা তবে তাৎপর্যপূর্ণ সফরে ঢাকায় আসা সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালাকৃষ্ণণ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তার দেশ বাংলাদেশে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমে দ্রুত প্রত্যাবাসন দেখতে চায়। সিঙ্গাপুর মনে করে তাদের অবস্থান দীর্ঘায়িত হলে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন মিয়ানমার সরকার রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে মিয়ানমার সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান মন্ত্রী বালাকৃষ্ণণ। সাক্ষাৎ শেষে তাকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। প্রেস সচিব জানান, ড. বালাকৃষ্ণণ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরজমিন দেখতে শনিবার রাতে ঢাকায় আসেন আসিয়ান জোটের বর্তমান চেয়ার সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল দিনের শুরুতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

পরে কক্সবাজার যান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তাকে কক্সবাজারের বালুখালি ক্যাম্পসহ আশেপাশের এলাকায় অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরজমিন দেখান এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফ করেন। এ সময় সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী বলেন, কোনো সভ্য সমাজে এমন নির্যাতন কাম্য নয়। তিনি বর্মী বর্বরতার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি নির্যাতিতদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত এবং হৃদয় খুলে দেয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেন। মন্ত্রী বালাকৃষ্ণণ জানান, আগামী ১৩ই নভেম্বর থেকে সিঙ্গাপুরে আসিয়ান জোটের সম্মেলন শুরু হচ্ছে। চেয়ার ও হোস্ট কান্ট্রি হিসেবে সিঙ্গাপুর ৩ দিনের ওই সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিস্তৃত আলোচনা চাইছে। মিয়ানমারের শীর্ষ নেতৃত্বের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের মুখ্য আলোচ্য হবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। বাংলাদেশের তরফে ওই সম্মেলনের শুভ কামনা জানানো হয়।

মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ: এদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম অভিযানে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার পর সেখানে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা দেশের জন্য বিরাট বোঝা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা বিশেষ করে
নারী ও শিশুরা মিয়ানমারে ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, মানবিক কারণে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে। শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রশংসা করেন। তিনি মিয়ানমারকে বাংলাদেশের বন্ধুভাবাপন্ন দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশের মাটিতে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করতে না দেয়ার অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের জন্য জমি বরাদ্দের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এসব অঞ্চলে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান। বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের ফলে গত অর্থবছরে ৭.৮৬ শতাংশ জিডিপি অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ৮.২৫ শতাংশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী সিঙ্গাপুরের মাটি স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের নদীগুলো ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে এদেশ থেকে বালু-মাটি নিতে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান এবং ঢাকায় সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লোহ ইইউ-সি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত

ফের লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আবারও চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে ...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সব কমিটি স্থগিত

শাহবাগে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ। ছবি: সংগৃহীত কেন্দ্রীয় ...

শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে অভিভাবকের ফোন নম্বর যুক্ত করার নির্দেশ

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে বাবা-মা বা অভিভাবকের ফোন নম্বর সংযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ...