
উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ার বিস্তীর্ণ সংরক্ষিত পাহাড়ে নির্বিচারে রোহিঙ্গা বসতি স্থাপনের কারণে ধ্বংস হচ্ছে বনভূমি। এতে ওই অঞ্চলে বসবাসরত এশিয়া প্রজাতির হাতি বিলুপ্তের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে ওই অঞ্চলে আড়াইশ’র বেশি বন্য হাতির অবস্থান থাকলেও ইতোমধ্যে তারা নিরাপদ বাসস্থান হারিয়েছে।
এক থেকে দেড় মাস আগেও চট্রগামের দোহাজারি ও চুনুতি রেঞ্জওয়ে টেকনাফের পাহাড়ি বনভূমিতে ঘুরে বেড়াত এশিয়া প্রজাতির ইন্ডায়া উপপ্রজাতির হাতিগুলো। আইইউ- এর তথ্যমতে, কক্সবাজারের উত্তর-দক্ষিণ বনভূমিতে ৪৬-৭৮টি বন্য হাতির বিচরণ রয়েছে। কিন্তু এখন দৃশ্যপট বদলে গেছে। বর্তমানে উজাড় হওয়া বন ও পাহাড়ে গড়ে উঠেছে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গার বসতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অফ ফরেস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক এ এইচ এম রায়হান সরকার বলেন, ‘এই জায়গায় যদি সরকার রোহিঙ্গাদের স্থায়ী আবাসন গড়ে তোলে তবে নিশ্চিতভাবে হাতির চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে।
জাতিয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৩১ সালে সরকার টেকনাফ এবং উখিয়ার তিরিশ হাজার একর পাহাড়ি বনভূমিকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু ১৯৭৮ সাল থেকে এখানে গড়ে উঠেছে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের আবাস। আগে এখানের ৮০০ একর বনভূমি রোহিঙ্গাদের কাছে বেহাত হলেও এখন যোগ হয়েছে আরো অন্তত ২৫০০ হাজার একর পাহাড়ি বনভূমি।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অফ ফরেস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. দানেশ মিয়া বলেন, ‘কতগুলো ছোট ছোট বনভূমি যে গুলো কক্সবাজারে ছিল তা এখন সম্পূর্ণ রূপে শেষ হয়ে যাবে। আর বনভূমি ধ্বংস হয়ে গেলে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
মূলত কক্সবাজারের কুতুপালং,উখিয়া,বালুখালি,মোকড়ার বিল,জামতলি বাগঘুনা,কারাংতলি,উনসিংপ্রং এলাকা বন্য হাতির মূল বিচরণ ক্ষেত্র।
এখানে হাতি চলাচলের জন্য ৭টি স্থায়ী ও ৯টি অস্থায়ী করিডোর রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অফ ফরেস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক এ এইচ এম রায়হান সরকার বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বোমা পুঁতছে ফলে হাতির বিলুপ্তি ঘটতে পারে।’
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর এখানে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা গেছে দু’জন। এ অবস্থায় বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র রক্ষায় রোহিঙ্গাদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার মত বিশেষজ্ঞদের।
আগস্টে মিয়ানমারে সংঘাতের পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশে রোহিঙ্গা এসেছে প্রায় চার লক্ষ। মানবিক কারণে তাদের থাকার জন্য প্রায় ২০০০ হাজার একর পাহাড়ি ভূমি বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। সময়টিভি
পাঠকের মতামত