
আমাদের বাঙালি বাবুদের মনে সব কাজ করাটা যেন গায়ে লাগে।জাতি হিসেবে আমরা যেমন অলস তেমন হীনমন্য।একজন গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট কিংবা গ্রাজুয়েট রানিং স্টুডেন্ট রেস্টুরেন্টে কাজ করে?
অনলাইন বিজনেস কিংবা হোম ডেলিভারি কাজ করে?
গবাদিপশু পালন, মৎস্য চাষ এগুলো করতে দেখা যায় আমাদের দেশে?
গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট তো অনেক বেশি একজন এসএসসি পাশ স্টুডেন্টও এই কাজগুলোর প্রতি আগ্রহ দেখায় না।ছাত্রকালীন এমন কি বেকার থাকলেও তারা এই কাজগুলোকে মনে প্রাণে নিতে পারেনা।
তাদের এ মানসিকতার কারণ, তারা ভাবে কেউ কিছু বলবে না তো।
হ্যাঁ বলে,এটার ভুক্তভোগী আমি নিজেও।
যখন গ্রাজুয়েট শেষ করে একটা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে জব নিয়েছিলাম,প্রতিবেশীদের কি কটাক্ষ শুনতে হয়েছে মা-বাবা কে,তেমনি শুনতে হয়েছে যখন আরেকটা নিন্ম-মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করতাম।
আবার যখন খাদ্যের ব্যবসা করতাম তখন বন্ধু মহল থেকে শুরু করে সবার মাঝে হয়ে গেলাম তামাশার উদাহরণ।
আরে,এতোকিছু আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি কারণ তখন আমি ছিলাম ছাত্র।আমার আয়েত উৎসের প্রয়োজন ছিলো সেটা মাসিক দুই হাজার বা ২০ হাজার যাই হোক।
আমার মা আমাকে জিজ্ঞাসা করতেন,আচ্ছা তোর স্থায়ী কোন চাকুরী না হলে কি করবি,আমি মাকে হাসিমুখে বলতাম আমি যা শিখেছি তা দিয়েই খুব সুন্দর করে জীবন পার করতে পারবো।
অথচ, উন্নত বিশ্বের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন,যে ছাত্ররা এখানে প্রায় কাজকেই হেয় করতো কিংবা করতে সংকোচ করতো তারাই, রেস্টুরেন্টে, কুলির কাজ থেকে সবকাজেই সারাজীবন কাটায়।
কারণ তারা সেখানে গিয়ে শিখতে পারে কোন কাজই ছোট কিংবা হেয় নয়।
জীবন যাপনের জন্য, পরিবারকে সুখী করার জন্য আয় টুকুই দরকার।তবে উপার্জন হতে হবে সৎ উপায়ে।
আসুন আমাদের নিজেদের পরিবর্তন করি,পরিবর্তন করি আমাদের চিন্ত-চেতনাকে,উন্নত করি মানসিকতাকে।
লেখক
সঞ্জয় বড়ুয়া
অফিসার, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড
রামু শাখা, কক্সবাজার।
পাঠকের মতামত