
চকরিয়ার চিরিংগা হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠেছে। নির্ভরযোগ্যসূত্রে জানা যায়, রাতের বেলায় পণ্যবাহী ট্রাক আটক করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। এছাড়া অবৈধ সিএনজি, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক (টমটম) ও অটোরিকশা আটক করে এসব গাড়ির চালকদের জিম্মি করা হয়। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় গাড়িগুলোর মালিক ও চালকদের মামলার ভয় দেখিয়ে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করে তাঁরা। এতে নিরুপায় হয়ে চালকরা টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নিয়মিত যাতায়াত করা ট্রাক চালক মো. এমরান বলেন, ‘আমি প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাই। কিন্তু চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশের মতো চালকদের এতোবেশি হয়রানি খুব কমই করা হয়। চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও হয়রানিতে অতিষ্ঠ আমার মতো আরও হাজারো ট্রাক ড্রাইভার।’
তিনি আরও জানান রাতের বেলায় চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থেকে চকরিয়ার প্রবেশ পথ আজিজনগরের স্বাগতম গেইট থেকে শুরু করে ঝণঝনিয়া ব্রীজ পর্যন্ত একাধিক পয়েন্টে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে চাঁদা আদায় করে পুলিশ। চাঁদা দিতে অপারগ হলে গাড়ি আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় হাইওয়ে থানায়। গাড়ি আটক করলেও মামলা না দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন পরিবহন দালালদের মধ্যস্ততায় টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় গাড়ি।
স্থানীয় সিএনজি চালক নজরুল ইসলাম বলেন, চিরিংগা হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুল হক ভুঁইয়া যোগদান করার পর থেকেই হয়রানি আর চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চিরিংগা হাইওয়ে থানা পুলিশ। ওসির নির্দেশনায় এসআই জসিম, এএসআই লিটনসহ একাধিক পুলিশ সদস্য চালকদের জিম্মি করে প্রতিনিয়ত চাঁদা আদায় করছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছি আমরা।
এদিকে বানিয়ারছড়া তল্লাশি চৌকি পয়েন্টে রাতে পুলিশ একটি ট্রাক গাড়ি থামিয়ে চালকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, এক পুলিশ সদস্য চালকের মুখ বরাবর টর্চলাইট ধরে গাড়ি থামায়। অন্য এক সদস্য চালকের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। টাকা দেওয়ার সাথে সাথে ট্রাক গাড়িটা ছেড়ে দেয় পুলিশ।
হারবাং এলাকার ট্রাক চালক মনসুর আলম বলেন, দিনের চাইতে রাতের বেলায় বেশি বেপরোয়া চিরিংগা হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কে যান চলাচলের জন্য তাঁদেরকে দিতে হঅয় মাসোহারা। যারা মাসোহারা দেয় তাঁদের ধরিয়ে দেওয়া হয় টোকেন। এ টোকেন না থাকলে গাড়ি আটকিয়ে এককালীন দশ-পনেরো হাজার টাকা নেন তাঁরা। পাশাপাশি পরের মাস থেকে টোকেন সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে গত ৯ মার্চ হারবাং স্টেশনে চিরিংগা হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুল হক ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে মহাসড়কে টোকেন বাণিজ্য, গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ এনে মানব বন্ধন করে বিভিন্ন যানবাহনের চালকেরা।
জানতে চাইলে চিরিংগা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুবুল হক ভুঁইয়া বলেন, যেসকল অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। মূলত মহাসড়কে সিএনজি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা সিএনজি পেলেই ধরে মামলা দিচ্ছি। গত মাসে এ সংক্রান্তে ৪১টি মামলা হয়েছে। এর ক্ষোভে তাঁরা এমন মিথ্যা অভিযোগ করছে।
সুত্র’ দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত