প্রকাশিত: ২০/১০/২০১৮ ৮:০৬ এএম

নিউজ ডেস্ক।::

মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে গত পাঁচ মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২৬০ মাদককারবারি নিহত হয়েছে। অভিযানে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৬৫ হাজারের বেশি মাদককারবারি। এ ছাড়া মাদক ব্যবসায়ীদের বড় একটি অংশ গা ঢাকা দিয়েছে।

তবে টানা অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের পর মাদকের চোরাচালান কমে এলেও থেমে নেই ইয়াবার বিকিকিনি। মাদকবিরোধী অভিযানে যুক্ত একাধিক সূত্র জানায়, অভিযানের ফলে মাদকের দাম বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। এটিকেই ‘আপাতত সাফল্য’ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিকল্প উপায়ে মাদক ব্যবসা শুরু হওয়ায় সেটি মোকাবিলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা বিস্তারের বিষয়টি অনেকটাই ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের।

র‍্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, মাদকের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে জেঁকে বসে আছে। সেটি চাইলেই স্বল্প সময়ের মধ্যে থামানো যাবে না। এ জন্য সময় দরকার। তবে চলমান অভিযানের কারণে মাদক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের মনোযোগ থাকবে নির্বাচনকেন্দ্রিক। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফের মাদকের বাজার চাঙ্গা করার চেষ্টা চালানো হতে পারে। কিন্তু সেই সুযোগ বন্ধ করতে যে কোনো পরিস্থিতিতে মাদকের ওপর বিশেষ নজর রাখার পরিকল্পনা করছে র‍্যাব-পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিট।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, গাঁজা-ফেনসিডিলের মতো মাদক অনেক স্থানেই পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু স্বল্পসংখ্যক খুচরা মাদক ব্যবসায়ীকে ইয়াবা বিক্রি করতে দেখা গেছে। সরবরাহ সংকটের কারণে এগুলো কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন তারা। কারণ হিসেবে তারা জানান, এখন মাদক চোরাচালান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বেশি ঝুঁকি নিয়ে গাঁজা বা ফেনসিডিলের মতো মাদক না এনে ইয়াবা আনায় লাভজনক।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে গত ১৫ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৬০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে র্যাবের হাতে ৮১ জন, পুলিশের হাতে ১৪৮, ডিবি পুলিশের হাতে ২৮ ও বিজিবি- র‍্যাবের যৌথ অভিযানে তিনজন নিহত হন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিক্টিমোলজি অ্যান্ড রেস্টোরেটিভ জাস্টিস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক আমাদের সময়কে বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দিতে একটি শক্তিশালী গ্রুপ গড়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করা না গেলে অভিযান পুরোপুরি সফল হবে না। আইনশৃঙ্খলাকারী বাহিনীরও একটি অসাধু অংশ মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন এমন খবর গণমাধ্যমে দেখা যায়। এসব দিক সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের দাবি রাখে।

বিশেষ অভিযানের মধ্যেই গত আগস্টে ইয়াবার প্রবেশদ্বারখ্যাত কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় ৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে এলিট ফোর্স র‍্যাব। ক্যাম্পগুলো ইয়াবার অন্যতম গেটওয়ে হিসেবে পরিচিত পাওয়া এলাকায় অবস্থিত। এসব ক্যাম্পে মাদকবিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডগ স্কোয়াডসহ আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে।

র‍্যাবেরআইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, মাদক কিনতে গেলে বোঝা যাবে অভিযানের ফলে পরিস্থিতি কী দাঁড়িয়েছে। মাদক এখন অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। তবে এটিকে একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনতে সময় লাগবে। কারণ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘদিনে। যে কোনো পরিবেশে মাদকবিরোধী অভিযান চলমান থাকবে।

গত ১৪ মে সংবাদ সম্মেলনে মাদকের শেকড় উপড়ে ফেলার ঘোষণা দেন র‍্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। এ সময় তিনি আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের কথা জানান। মূলত এ ঘোষণার পর দিন থেকেই সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...