প্রকাশিত: ২৪/০৬/২০২০ ১২:১৯ পিএম

পুলিশকে সরিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ১৪টি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব আগামী ১ জুলাই থেকে আর্মস পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। ডেপোটেশনে আসা পুলিশ পরিদর্শকদের দায়িত্ব পালনে অনীহার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

ইতোমধ্যে কক্সবাজার শহরে এপিবিএনের দুটি ব্যাটালিয়ন খোলা হয়েছে। ১৪ নম্বর ব্যাটালিয়ন খোলা হয়েছে নগরীর হলিডে মোড়ে, ১৬ নম্বর ব্যাটালিয়ানটি দরিয়ানগরে। এই দুই ব্যাটালিয়ানে ৫০০ এপিবিএন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি ব্যাটালিয়নের নেতেৃত্বে থাকবেন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন অধিনায়ক। তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন থেকে শুরু করে অভ্যন্তরে ঘটা যে কোনো ঘটনার তদন্ত কার্যক্রমও পরিচালনা করবেন।

এপিবিএন ১৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আতিকুর রহমান বলেন, নতুন এই দুই ব্যাটালিয়নে পাঁচশ এপিবিএন সদস্য থাকবেন। এতদিন জেলা পুলিশ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করতো। পুলিশ বাহিনীর অংশ হিসেবে তাদের সহযোগিতা করতেন এপিবিএন সদস্যরা। এখন এপিবিএন পুরোদমে এই দায়িত্বটি পালন করবে। তিনি বলেন, জেলা পুলিশকে অনেক সময় নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে বিশেষায়িত বাহিনী হিসেবে এপিবিএন এখন থেকে শরণার্থী শিবিরগুলোতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা চৌকি ও কক্সবাজার, উখিয়া এবং টেকনাফের তল্লাশি চৌকিতে যে সব পুলিশ দায়িত্ব পালন করতেন, প্রতিটিরই প্রধান থাকতেন একজন পরিদর্শক। তারা চট্টগ্রাম শহর ও জেলাসহ বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রেশনে আসতেন এখানে। তাদের চাকরির মূল জায়গা থেকে মাত্র কয়েক সপ্তাহের জন্য আনা হতো। দেখা যায়, এই কাজটি স্থায়ী না হওয়ায় বেশিরভাগ পরিদর্শক কর্মস্থলে যেতেন না। তারা কক্সবাজার শহরে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করতেন। মাঝে মাঝে শরণার্থী শিবিরের সংশ্লিষ্ট কর্মস্থলে গিয়ে স্বল্পসময় অবস্থান করে পুনরায় শহরে ফিরতেন। অধস্তন উপ-পরিদর্শক (এসআই) কিংবা সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) এসব নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য করার সুযোগ থাকত না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মূল ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালন না করায় শরণার্থী শিবিরে কর্মরত অন্য পুলিশ সদস্যদের মধ্যেও ঢিলেঢালা ভাব দেখা যায়। বিশেষ করে বিকাল ৪টার পর বাংলাদেশের প্রশাসনের কোনো প্রভাবই থাকে না রোহিঙ্গা শিবিরের অভ্যন্তরে। তখন এটা হয়ে উঠে একখ- মিনি আরাকান। এ সময় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ইচ্ছেমতো বের হয়। তারা নিজেদের মতো করে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

এপিবিএন-এর এক পরিদর্শক আমাদের সময়কে বলেন, নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার কাজটিও অনেক বেশি দরকার। তিনি বলেন, জাতিসংঘসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা নিয়মিত শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় ভেতরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট রাখতে হবে। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলাও একটা বড় ব্যাপার হয়ে উঠেছে এখন। এটা প্রেশনে আসা পুলিশ কর্মকর্তারা ঠিকমতো করতে চাইতেন না। ফলে রোহিঙ্গা মহিলারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। পুরুষরাও এলাকায় শ্রমিকের কাজসহ সব কিছু করছে। শরণার্থী শিবিরের ভেতরে বড় বড় ডাকাতদল গড়ে উঠেছে। স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক গরিব লোক নতুন করে রোহিঙ্গা মেয়েদের গোপনে বিয়ে করা শুরু করেছে।

জানা যায়, বিষয়টি জানার পর বর্তমান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজির আহমেদ পুরো পদ্ধতিই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি শরণার্থী শিবির থেকে জেলা পুলিশকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে সেখানে এপিবিএন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য কক্সবাজার শহরে দুটি ব্যাটালিয়ন স্থাপন করা হয়।

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...