প্রকাশিত: ১৪/০৪/২০১৮ ৭:০৮ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:১১ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক:;rohi
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল জেনেভায় ইউএনএইচসিআরের সদর দফতরে এই স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক এবং ইউএনএইচসিআরের মহাপরিচালক ফিলিপো গ্র্যান্ডি নিজ নিজ পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন। চুক্তি অনুসারে, রোহিঙ্গারা যখন নিজেরাই রাখাইনে ফেরার জন্য নিরাপদ বোধ করবেন তখন ইউএনএইচসিআর তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে। অর্থাৎ মিয়ানমারে সহায়ক পরিবেশ তৈরির ওপর নির্ভর করবে এ স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। এর আগে ১৯৯২ সালে যখন রোহিঙ্গারা এসেছিল, তখনো ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি হয়েছিল বলে জানিয়েছে ঢাকার পররাষ্ট্র দফতর। জাতিসংঘের জেনেভা সদর দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ফেরার সহায়ক পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি মনে করছে ইউএনএইচসিআর। বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গারাও মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ফিরে যাওয়ার আগে তাদের আইনি অবস্থান, নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা চায়। রোহিঙ্গাদের নিয়ে এ সংকটের মূল কারণ খুঁজতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে ইউএইচসিআর। এর আগে মিয়ানমার সরকারের অতিদ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। ইউএনএইচসিআর মনে করছে, সেখানে পরিদর্শন করতে পারলেই কেবল প্রত্যাবাসনের নিরাপদ পরিবেশ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জানতে পারা যাবে। পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত এসব নাগরিকের রাখাইনের সেন্ট্রাল টাউনশিপগুলোতে চলাচলের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাও শিথিল করতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলে রাখাইনে ফেরার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হবে রোহিঙ্গারা। সংকটের টেকসই সমাধানে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এসব পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ইউএনএইচসিআরের মধ্যে কোনো ত্রিপক্ষীয় চুক্তি না থাকায় দুই দেশের সঙ্গে আলাদা আলাদা সমঝোতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছে ইউএনএইচসিআর। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও মর্যাদাসম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা এর লক্ষ্য। এর মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলো। মিয়ানমারে জাতিসংঘের আরেক সংস্থা ইউএনডিপিকে সঙ্গে নিয়ে ইউএনএইচসিআর সে দেশের সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করার কাজ করছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে প্রত্যাবাসনের কাঠামো তৈরির মাধ্যমে রাখাইনে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা দেওয়াও হবে এই সমঝোতা স্মারকের লক্ষ্য। ঢাকার পররাষ্ট্র দফতর সূত্রের খবর, এর আগে ১৯৯২ সালে যখন রোহিঙ্গারা এসেছিল, তখনো ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির আদলে এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে সমঝোতা স্মারকটি চূড়ান্ত করে সই করা হয়েছে। সমঝোতা স্মারকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার অধিবাসী হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। চুক্তিতে প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার ও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ভূমিকা ও কার্যক্রম সম্পর্কে বিশদভাবে বলা আছে। স্মারক অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের তথ্য সরবরাহ, কাঠামো তৈরির জন্য জমি দেওয়া ও অন্যান্য সুবিধা নিয়ে কাজ করবে সরকার। অন্যদিকে, রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া, তাদের অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর। এর আগে জানুয়ারি মাসে সরকার ও শরণার্থী সংস্থা তথ্য সরবরাহ সংক্রান্ত যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল তা এই সমঝোতার স্মারকের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়া মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও প্রত্যাবাসনের জন্য দুটি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। প্রত্যাবাসনের জন্য একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপও গঠন করা হয়েছে। ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত আগস্টের পর ৬ লাখ ৭০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়াও গত এক দশক থেকে আরও প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। বিশালসংখ্যক এই রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে প্রয়োজনীয় আতিথেয়তা, নিরাপত্তা ও সহায়তা করায় বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা।

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...