
তোফায়েল আহমদ,কক্সবাজার::
কক্সবাজারে সরকারি বন বিভাগের বনায়ন কাজে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো থেকে রোহিঙ্গারা নিয়ম ভেঙে অবাধে বেরিয়ে এসে সরকারি প্রকল্পের কাজে যুক্ত হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে বন বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের সরকারি কাজে ব্যবহার করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবশ্য কিছু স্থানীয় লোকও এ প্রকল্পে কাজ করছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘকাল পর সরকার বন বিভাগের মাধ্যমে রাজস্ব খাতে বনভূমিতে বনায়নের কাজ শুরু করেছে। এই কর্মসূচির আওতায় কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের রামু বাঁকখালী রেঞ্জের তিনটি বন বিটের ২৬৫ হেক্টর পাহাড়ি ভূমি রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মতে শিবিরগুলো থেকে কোনো রোহিঙ্গা বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারবে না। কিন্তু বন বিভাগের ওই প্রকল্পে শিবির থেকে আসা রোহিঙ্গাদের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এতে স্থানীয় বনজায়গিরদারসহ গ্রামের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন কর্মকর্তারা সস্তায় শ্রমিক নিয়োগের মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা সাশ্রয় করে নিজেরা ভাগ-বাটোয়ারা করতেই এমন কাজ করছেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চান, ‘উখিয়া-টেকনাফের শিবিরগুলো থেকে রোহিঙ্গারা বাইরে আসে কিভাবে? আমাদের জানা মতে শিবিরের ভেতরে থাকার কথা রোহিঙ্গাদের। তারা বাইরে না গেলে তো কোনো সমস্যাই হওয়ার কথা নয়।’
তবে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যরা কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন রোহিঙ্গাদের। তার পরও বাজারে কেনাকাটা বা অন্য কোনো অজুহাতে অনেক সময় অনুমতি নিয়ে রোহিঙ্গারা বের হয়।
অভিযোগ উঠেছে, বনায়নের কাজে জড়িত বন বিভাগের ভিলেজার এবং হেডম্যান নামধারী বনজায়গিরদাররা শিবির থেকে সস্তায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে বনায়নের কাজে নিয়োগ করেছেন। এ বিষয়ে বনজায়গিরদার জয়নাল বলেন, বনায়নের বরাদ্দের টাকা কম হওয়ায় স্থানীয়দের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করে কাজ করানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এ জন্য কিছু রোহিঙ্গা নিয়োগ করতে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন।
ঘিলাতলী বন বিটের বিট কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার আওতাধীন ১৩৫ হেক্টর বনভূমিতে বনায়নের কাজ চলছে। বনজায়গিরদারের আনা শ্রমিকরাই কাজ করছে। কে স্থানীয় এবং কে রোহিঙ্গা তা জানি না।’
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে রেঞ্জ অফিসের সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োজিত স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘আমি বাঁকখালী রেঞ্জ অফিসের রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলাম কিছু রোহিঙ্গা পেয়েছি, ওদের দিয়ে কাজ করাব কি না। উনি আমাকে রোহিঙ্গাদের দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন।
পাঠকের মতামত