প্রকাশিত: ১৪/০৭/২০১৮ ৭:১৯ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:৪৫ এএম

নিউজ ডেস্ক ::
রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত নাফ নদে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। মিয়ানমারের আগ্রহ না থাকায় নাফ নদের ওপর সেতু এবং নদীর অন্য প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণে গৃহীত বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী (বালুখালী-ঘুমধুম) সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে মৈত্রী সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া এ সড়কের মাধ্যমে চীন, থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারসহ আঞ্চলিক উন্নয়নের সুযোগ ছিল।
সম্প্রতি প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির বৈঠকে (পিইসি) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে নাফ নদে সেতু নির্মাণ ও সড়ক নির্মাণে মিয়ানমারের সম্মতি পাওয়া যায়নি। এ পরিস্থিতিতে কাজ অসমাপ্ত রেখে প্রকল্প শেষ করার বিষয়ে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) একমত হয়েছে। ফলে প্রকল্পটি বাতিল হতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠমো বিভাগের প্রধান এনায়েত হোসেন সমকালকে জানান, প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ অংশের কাজ শেষ হয়েছে; কিন্তু বর্তমান রোহিঙ্গা পরিস্থিতিতে নাফ নদে সেতু নির্মাণ এবং নদীর ওপারে সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রকল্পটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হচ্ছে।
বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, সেতু ছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী (বালুখালী-ঘুমধুম) সীমান্ত সড়ক প্রকল্পের আওতায় দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের লক্ষ্য ছিল। এর মধ্যে ২৫০ মিটার মিয়ানমার অংশে এবং বাকি এক হাজার ৭০০ মিটার বাংলাদেশ অংশে। বাংলাদেশ অংশের এক হাজার ৭০০ মিটার সড়কের নির্মাণ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর-পরবর্তী সময়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের কারণে রাস্তার সীমান্তের কাছাকাছি অংশের কাজে জটিলতা দেখা দেয়। মিয়ানমার অংশে সেতু ও সড়ক নির্মাণের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিয়ানমারের সম্মতি পাওয়া যাচ্ছে না।

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতি সংক্রান্ত পরিপত্রের অনুচ্ছেদ ১৬ দশমিক ১৮ অনুযায়ী, কোনো প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখে সমাপ্ত ঘোষণা করতে হলে আইএমইডির মতামত আবশ্যক।

এদিকে সম্প্রতি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে এক প্রতিবেদনে আইএমইডি বলছে, স্থানীয় সমস্যার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নাফ নদে ওপর সেতু নির্মাণসহ নদীর অন্য পাড়ে অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ অনেকটাই অনিশ্চিত।
সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৮৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে প্রকল্প সংশোধন করে ব্যয় বাড়িয়ে ১১৫ কোটি টাকা করা হয়। সেইসঙ্গে ২০১৮ সালের জুনে কাজ শেষ করার লক্ষ্য পুনর্নির্ধারণ হয়। সম্প্রতি প্রকল্পটি মেয়াদ বাড়িয়ে দ্বিতীয়বার সংশোধনের প্রস্তাব করে বাস্তবায়নকারী সংস্থা। দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর পিইসি সভায় প্রকল্পটির মেয়াদ না বাড়িয়ে সমাপ্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। এ পর্যন্ত সে অর্থ ব্যয় হওয়ায় ৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকাকে প্রকল্প ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়েছে বলে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে গত বছরের আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নিয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বতর্মানে ১১ লাখের বেশি।

পাঠকের মতামত

মানবতার আলো জ্বলে উঠল কক্সবাজারে- তারুণ্যের অভিযাত্রিক পরিবার

ওমর ফারুক (সংবাদদাতা) কক্সবাজারে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালো সামাজিক সংগঠন তারুণ্যের অভিযাত্রিক ...

মানবপাচার মামলার চার্জশীট থেকে বাদ যেতে মরিয়া টেকনাফের সাব্বির আহমদ সবুয়া

টেকনাফ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কায়ুকখালী পাড়ার আলোচিত ইয়াবা ডন ও মানবপাচারকারী সাব্বির আহমদ প্রকাশ সবুয়া ...