প্রকাশিত: ০১/০৭/২০১৮ ৫:৩১ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:১৮ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট::
রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, ‘এ পরিস্থিতির জন্য আমরা (বিশ্বব্যাংক গ্রুপ) গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। এ থেকে প্রমাণ হয় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়। আমরা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য একটা সহায়তা তহবিল গঠনের কাজ করছি। এর অংশ হিসেবে আগামীকাল জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাব। রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা ৪০০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছি। এর পুরোটাই অনুদান হিসাবে বিবেচ্য হবে।’

রোববার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ ভিডিও বার্তায় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এসব কথা বলেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘একক দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক এবার বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছে। এ বছর বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংক তিন বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা) ঋণ দেবে।’

‘আমরা বাংলাদেশের জন্য কখনও এমন পরিস্থিতি (রোহিঙ্গা সংকট) আশা করিনি। বরং বাংলাদেশের জন্য আমরা সবসময় উন্নয়ন পরিস্থিতি আশা করেছি। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি হচ্ছে একটা মানবিক বিপর্যয়। রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্বব্যাংক যে সহায়তা দিচ্ছে সেটা অতি সামান্য। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এগিয়ে আসতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আমাদের সকলের কাজ করা প্রয়োজন। আমি আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, বাংলাদেশের মানুষ এত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করেছে।’

বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু আমাদের দেশ ও জাতির জন্য একটি জটিল জাতীয় সমস্যা। এটা আমাদের জন্য একটি বড় বোঝা। এ জটিলতা নিরসনে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। এটা আমাদের একার পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘এমন একটা সংকটময় মুহূর্তে বিশ্বব্যাংককে পাশে পাওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। রোহিঙ্গাদের মতো এত বড় বোঝা বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে, বিশ্বের অন্য কোনো দেশ কখনও তা গ্রহণ করতো না। আমরা রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে যথাযথ মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে ফেরত পাঠাতে চায়। এজন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্মরণাপন্ন হয়েছি। কারণ এটা আমাদের জন অনেক বড় বোঝা। তারই অংশ হিসেবে আজ আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘের মহাসচিবকে কাছে পেয়েছি।’

গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে নির্যাতনের মুখে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা আশ্রয়ের খোঁজে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে। বহিরাগমন বিভাগ ও পাসপোর্ট অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য থেকে এ সংখ্যা জানা যায়।

বহিরাগমন বিভাগ ও পাসপোর্ট অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার এবং ইউএনএইচসিআরের কর্মীরা রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের কাজ করছেন।

পাঠকের মতামত

কঠোর নির্দেশনার পরও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা ছাড়ছে না ভোটের মাঠ

সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে কঠোর নির্দেশনা ...

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের নিতে জাহাজ আসবে এ সপ্তাহেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফের ...