হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ২৮/০৫/২০২৫ ৫:৪০ পিএম
রোহিঙ্গা

উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ি জনপদ এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধ্বস এখন এক আতঙ্কের নাম। একদিকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে পাহাড় কাটা, অন্যদিকে অস্থায়ী বসতি গড়ে ওঠায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। গত এক দশকে (২০১৫-২০২৪) উখিয়া ও আশেপাশের এলাকায় পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭ জনেরও বেশি মানুষ। নিচে উল্লেখ করা হলো বিভিন্ন সময়ের বড় বড় দুর্ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ:১৭ সালে কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রাণ হারান ১১ জন। অধিকাংশই রোহিঙ্গা শরণার্থী। কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভূমিধসে ঘর চাপায় মৃত্যু হয় শিশু, নারীসহ বহু মানুষের। ২৭ জুলাই ২০১৯ সালে উখিয়া উপজেলার থাইংখালী এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে ৭ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়। এ সময় একটি অস্থায়ী ঘর সম্পূর্ণ ধসে পড়ে, শিশুসহ একই পরিবারের ৩ জন মারা যায়। ৫ আগস্ট ২০২০ সালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে বিশাল পাহাড় ধ্বসে পড়ে ৩ জন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। ওই সময় সড়ক যোগাযোগ ১০ ঘন্টার জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ২০ জুন ২০২১ সালে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১১ ও ১২ তে মাটির নিচে চাপা পড়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরো অন্তত ১২ জন। ১৬ জুলাই ২০২২ সালে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতেরবিল এলাকায় রাতের আঁধারে পাহাড় ধসে ৪টি ঘর চাপা পড়ে। এতে ৩ জন নিহত হয় এবং ৬ জন আহত হয়। ১২ জুন ২০২৩ সালে রাজাপালং ইউনিয়নে পাহাড় ধসে প্রাণ হারান ৬ জন, যাদের মধ্যে ২ জন শিশু ছিল। ২০২৪ সালে টেকনাফের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় প্রবল বর্ষণে ভূমিধ্বসে ৫ জনের মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ৩ জন নিহত হয়। তদমধ্যে ১জন রোহিঙ্গা ও ২জন স্থানীয়। ওই সময় আহত হন ৫জন। ২০১৬ সালে নিহত হন ৫ জন। তদমধ্যে ২ জন রোহিঙ্গা ৩ জন স্থানীয়। ওই সময়ে আহত হন ৮জন। ২০১৭ সালে নিহত হন ১১ জন। তদমধ্যে ৭জন রোহিঙ্গা ও ৪জন স্থানীয়। ওই সময়ে আহত হন ১৫ জন। ২০১৮ সালে নিহত হন ৮জন। তদমধ্যে রোহিঙ্গা ৫ জন ও স্থানীয় ৩ জন। ওই সময়ে আহত হন ১০ জন। ২০১৯ সালে নিহত হন ৭ জন। তদমধ্যে রোহিঙ্গা ৬ জন এবং স্থানীয় ১ জন। আহত হন ৬ জন। ২০২০ সালে নিহত হন ৪ জন। তদমধ্যে রোহিঙ্গা ৩ জন ও স্থানীয় ১ জন। আহত হন ৪ জন। ২০২১ সালে ৫ জন রোহিঙ্গা নিহত হন। এবং ১২ জন আহত হয়। ২০২২ সালে ৩ জন নিহত হন। তদমধ্যে রোহিঙ্গা ১ জন ও স্থানীয় ২ জন। আহত হন ৬ জন। ২০২৩ সালে নিহত হন ৬ জন। তদমধ্যে ৩ জন রোহিঙ্গা ও ৩ জন স্থানীয়। আহত হন ৯ জন। ২০২৪ সালে ৫ জন নিহত হয়। তদমধ্যে ২ জন রোহিঙ্গা ও ৩ জন স্থানীয়। ওই সময়ে আহত হন ৭ জন। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয়, এনজিও, ফায়ার সার্ভিস, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর তথ্যমতে মোট ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। তদমধ্যে রোহিঙ্গা ৩৫ জন ও স্থানীয় ২২ জন রয়েছেন। রোহিঙ্গা ও স্থানীয় মিলে আহত হয়েছেন ৮২ জন। বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে পাহাড় কাটা এবং বর্ষায় বসতি গড়ে তোলার প্রবণতা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের সর্তকতা ও পদক্ষেপের পরও অনেকেই নিরাপদ স্থানে সরে যান না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত লাখো মানুষ এখনো পাহাড়ি ঝুঁকির মুখে। প্রশাসনের পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ করণীয়- ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো চিহ্নিত করে পূর্ব প্রস্তুতি। মাইকিং, সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র। পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে পাহাড় কাটা রোধ। সচেতন মহলের আহ্বান:-
এবার আর যেন প্রাণ না যায়। দ্রুত ও কার্যকর বাস্তবায়ন হোক ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের পুনর্বাসনের

পাঠকের মতামত

ঘুমধুম সীমান্তে ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা আটক করেছে ৩৪ বিজিবি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ...