প্রকাশিত: ১৩/১১/২০১৭ ৮:০৭ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:১৩ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সহিংসতার মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহ অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আট লাখের বেশি রোহিঙ্গার খাদ্যের জন্য তহবিল সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত দাতাদের কাছে ধর্না দেওয়া হচ্ছে তহবিলের জন্য। বাংলাদেশে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এর প্রতিনিধি ক্রিস্টা রাডের সম্প্রতি ইত্তেফাক প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য ৭ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তিন কোটি ডলার প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে আরও দুই কোটি ৪০ লাখ ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

তিনি জানান, জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের জন্য ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার তহবিল চেয়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে। ডব্লিউএফপি’র অংশও এর মধ্যে রয়েছে। দাতারা এই আহবানে সাড়া দিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার প্রদানে রাজি হয়েছে।

ক্রিস্টা রাডের বলেন, ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, ইতালি-সহ কয়েকটি দেশ ও ইউনিসেফ তহবিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আমরা আশা করছি চলতি বছরের শেষদিকে আরো কিছু দাতা দেশ রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ দেবে। তিনি রাখাইনে সহিংসতার মুখে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরো উদার মনোভাব প্রত্যাশা করেন। কারণ এসব রোহিঙ্গারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।

রাডের বলেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য দাতারা তহবিল দিয়ে যাবে এমনটা নাও হতে পারে। তাই তাদের কিছু অংশ নিজেদের জীবিকা অর্জনে কাজ করতে পারে। উখিয়ার বালুখালিতে বাংলাদেশ সরকার তিন হাজার একর জমি বরাদ্দ করেছে। সেখানে ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার কাছে রোহিঙ্গা পুরুষরা সম্পৃক্ত হতে পারে। রোহিঙ্গাদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন সাবান, জ্বালানি ও চুলা তৈরির মতো কাজে তাদের যুক্ত করতে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। তারা বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প তৈরি করতে পারে যা দেশের অন্য প্রান্তেও বিক্রি করা যেতে পারে। তবে এসব করার জন্য বেসরকারী খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। এটা হলে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের জন্য একটি উইন-উইন অবস্থা তৈরি হতে পারে। এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে রোহিঙ্গাদের কাজের অনুমতি না দিলে তাদেরকে অনাহারে দিন কাটাতে হবে। তবে রোহিঙ্গাদের এই ধরনের সুযোগ দেওয়া হলে স্থানীয় বাংলাদেশীদের কাজের ক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতিযোগিতার তৈরি হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

ডব্লিউএফপি’র প্রতিনিধি জানান, এক লাখ রোহিঙ্গা পরিবারকে প্রতি মাসে ৫০ কেজি চাল, নয় কেজি ডাল এবং চার লিটার করে তেল দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের প্রস্তুতকৃত খাদ্য ও বিস্কুট, শিশু, গর্ভবর্তী নারী ও বুকের দুধ খাওয়ানো নারীদের জন্য বিশেষ খাবার প্রদান করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে সাত লোক রোহিঙ্গাকে খাদ্য সরবরাহ করে চলেছে ডব্লিউএফপি। যা ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে। ডব্লিউএফপি’র নিজস্ব জনবল ও চারটি এনজিও শেড, ওয়াইপিএসএ, মুক্তি ও রিক এর মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিমাসে ডব্লিউএফপি’র খরচ হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। রাডের বলেন, তহবিল সংকটের কারণে তারা এখন সবচেয়ে অরক্ষিত যেমন শিশু, স্তন্যদানকারী মা ও স্কুলে যাওয়া শিশুদের জন্য খাবার সরবরাহে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইলেকট্রনিক রশিদের মাধ্যমে তাদেরকে এসব খাবার দেওয়া হচ্ছে।

তবে একটি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কারণ কক্সবাজারের অনেক লোক এখনো কর্মহীন রয়েছে। রোহিঙ্গাদের কাজে সম্পৃক্ত করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

পাঠকের মতামত

১৫০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে ২৮৫ সেনাকে নিয়ে ফিরবে মিয়ানমারের জাহাজ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জা‌নি‌য়ে‌ছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ ...

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...