ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০৫/০৫/২০২৩ ৮:০৯ এএম

প্রথম দফা প্রত্যাবাসনের আগে মাঠ পর্যায়ের চিত্র দেখতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনে যাচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দল। এ প্রতিনিধিদলে থাকছেন এ সম্প্রদায়ের ২০ নেতা। তাদের সহযোগিতার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দলও সঙ্গে থাকবে। মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে আগে ওই রাজ্যের মংডু অঞ্চলের পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে শুক্রবার (৫ মার্চ) রোহিঙ্গা নেতারা যাচ্ছেন।

এসব তথ্য জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ এবং নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে অবস্থিত ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন।

মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কোন কোন সরকারি কর্মকর্তা রাখাইন যাচ্ছেন, তা এখনো জানা যায়নি। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখছে। প্রতিনিধিদলের হয়ে যে সব রোহিঙ্গা রাখাইনে যাচ্ছেন, তারাই মূলত মূখ্য ভূমিকা পালন করবেন সেখানে। রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলটি রাখাইনের পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকূল দেখে আশ্বস্ত হলে তা প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলার টেকনাফের নাফ নদী হয়ে প্রতিনিধিদলটি মিয়ানমারের মংডু শহরে যাবে। টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা, নয়াপাড়া ও জাদিমুড়া এলাকায় অবস্থিত ২৪, ২৬ ও ২৭ নম্বার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত ২০ জন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাকে বাছাই করা হয়েছে মিয়ানমারে যাওয়ার জন্য।

এর আগে প্রতিনিধিদলে নাম থাকা ২৬ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা (হেড মাঝি) বজলুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্প ইনচার্জের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার কথা রয়েছে। হয়তো প্রতিনিধিদলের সদস্যদের এদিন ক্যাম্প থেকে নিয়ে যাওয়া হবে টেকনাফ সদরের রেস্ট হাউজ বা আবাসিক হোটেলে। সেখান রাত যাপনের পর শুক্রবার সকালে যাত্রা শুরু হবে মংডুর উদ্দেশ্য।

প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে নাম থাকা ২৭ নম্বর ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা আবু সুফিয়ান আগেই জানিয়েছেন, ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের ডাকা হয়েছে। সেখানে তাদের করণীয় কী হবে সে বিষয়ে হয়তো ব্রিফ করা হবে। তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নেপিদোর কাছে ঢাকার দেওয়া রোহিঙ্গাদের তালিকা যাছাই-বাছাই করতে গত ১৫ মার্চ টেকনাফ হয়ে বাংলাদেশে আসে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। তারা টানা ৭দিন টেকনাফের স্থল বন্দর রেস্ট হাউজে অবস্থান করে আশ্রিত ১৪৭ রোহিঙ্গা পরিবারের ৪৮৬ জনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তাদের বক্তব্য রেকর্ড করেন। ২২ মার্চ সকালে প্রতিনিধিদলটি নাফ নদী পার হয়ে মিয়ানমারে ফিরে যায়। ওই সময় তাদেরকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যাদের প্রত্যাবাসন করা হবে সেই সব রোহিঙ্গা যাতে প্রত্যাবাসনের আগে রাখাইনের সার্বিক পরিবেশ স্বচক্ষে দেখে আসতে পারে তার ব্যবস্থা করতে। তারই ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল শুক্রবার (৫ মার্চ) রাখাইনে যাচ্ছে।

আরআরআরসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার পর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনের জন্য ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকায় দিয়েছিল। সে তালিকা যাছাই-বাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, শুক্রবার টেকনাফের নাফ নদী হয়ে রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি মিয়ানমারে যাওয়ার কথা রয়েছে। তাদের বৃহস্পতিবার রাত যাপনের জন্য টেকনাফে সদরে তিনটি হোটেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিনিধিদলে আরআরআরসির প্রতিনিধিও থাকবেন।

পাঠকের মতামত

ইরানের ভয়ে তটস্থ ইসরায়েল!

ইসরায়েলে বড় ধরনের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা আসন্ন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ...