ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১২/০৪/২০২৪ ৬:৫২ পিএম

ইসরায়েলে বড় ধরনের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা আসন্ন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররাও এমনটাই ধারণা করছে। এমন অবস্থায় ইসরায়েল চ্যালেঞ্জিং সময়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একই সঙ্গে ইসরায়েল সব ফ্রন্টে হামলার জন্য প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি ও মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলে সম্ভাব্য হামলার ক্ষেত্রে নির্ভুল নিশানার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে ইরান। সূত্রটি আরও বলছে, হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সরকারি ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে ইরান।

সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলায় দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। সেই ঘটনার পর ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে ইরান। তারপর থেকেই অঞ্চলটিতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করলেও বেসামরিক স্থাপনায় ইরান হামলা চালাবে না বলেই মনে হয়। এ ব্যাপারে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইসরায়েলকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ইসরায়েল তার মিত্র দেশগুলোকে জানিয়েছে, গাজায় আরও একটি বড় ধরনে অভিযান শুরুর আগে তারা ইরানি হামলার অপেক্ষা করছে। তবে ইরানি হামলা বা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান কবে শুরু হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

পশ্চিমা গোয়েন্দারা জানিয়েছে, ইসরায়েলে সরাসরি ইরান থেকেই হামলা করা হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। বরং লেবাননে থাকা ইরানপন্থী হিজবুল্লাহও এই হামলা চালাতে পারে। একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মিত্র দেশগুলোর গোয়েন্দা মূল্যায়নকে আমলে নিয়েছে।

এদিকে, ইরানি প্রতিশোধের ভয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ইসরায়েলি দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এমনকি কয়েকটি দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিতও করা হয়েছে। তবে কোন কোন দেশের দূতাবাস বন্ধ করা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি ব্লুমবার্গ।

টাইমস অব ইসরায়েলের খবর অনুযায়ী, এফ-১৫ ফাইটার জেট ঘাঁটিতে ইসরায়েলি সামরিক পাইলটদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জিং সময়ে রয়েছি, আমরা গাজায় একটি যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি, যা পুরোদমে চলছে।’

ইরানের সম্ভাব্য হামলার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে’।

আনাদোলু বলছে, ইসরায়েলের দূরপাল্লার হামলায় প্রাথমিক অস্ত্র হচ্ছে এফ-১৫ যুদ্ধবিমান। নেতানিয়াহু তার বক্তৃতার জন্য এই ঘাঁটিকে বেছে নেওয়ায় এটিকে ইরানকে লক্ষ্য করার হুমকির একটি ইচ্ছাকৃত ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সাধারণ একটি নীতি আছে: যারা আমাদের আঘাত করবে, আমরা তাদের আঘাত করব।’

ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার শঙ্কায় দেশটিতে কর্মরত নিজ দেশের নাগরিকদের প্রতি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, ‘অধিকতর সতর্কতার অংশ হিসেবে’ দূতাবাস কর্মীদের জেরুজালেমের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা ও গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইতোমধ্যে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে ইরান। যেকোনো সময় মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো জায়গায় ইসরাইলি স্বার্থে আঘাত হানতে পারে ইরান। এ নিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পাশাপাশি আতঙ্ক বিরাজ করছে

পাঠকের মতামত