প্রকাশিত: ১৬/০৭/২০২১ ১০:৩৭ পিএম

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাঁচ মাসের বেশি সময় আগে ক্ষমতা নেয়ার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে ৭৫ শিশু। এ সময়ে আটক হয়েছে প্রায় এক হাজার শিশু।

জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটি শুক্রবার এসব তথ্য জানায় বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, মিয়ানমারে গত পাঁচ মাসে ৭৫ শিশুর মৃত্যু হয়।

জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির প্রধান মিকিকো ওতানি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মিয়ানমারের শিশুদের অবরুদ্ধ করা হয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে তারা ভয়াবহ ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন নির্বিচার সহিংসতা, ইচ্ছামতো গোলাগুলি ও বেআইনি গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছে মিয়ানমারের শিশুরা।

‘শিশুদের দিকে বন্দুক তাক করা হচ্ছে। তাদের সামনে একই কাজ তাদের অভিভাবক ও ভাইবোনের সঙ্গেও করা হচ্ছে।’

20210128054620.gif
১৮ স্বাধীন বিশেষজ্ঞ নিয়ে শিশু অধিকার কমিটি গঠন করেছে জাতিসংঘ। মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা তদারকি করছে এ কমিটি।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশের হাতে শিশু হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ দল। কয়েকটি শিশুকে তাদের ঘরেই হত্যা করা হয় বলেও জানান তারা।

মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে ছয় বছর বয়সী এক শিশুকে পুলিশ পেটে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। সেই ঘটনাও বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে বলে জানান জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটির প্রধান ওতানি।

মিয়ানমারের থানা, কারাগার ও সেনা কেন্দ্রে শিশুদের আটক করার ঘটনারও সমালোচনা করে জাতিসংঘের ওই কমিটি।

কমিটি আরও জানায়, বিক্ষোভকারীদের বাড়িতে খুঁজে না পেয়ে তাদের সন্তানদের তুলে নিয়ে যায় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী।

মান্দালয়ে জান্তাবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করায় এক বিক্ষোভকারীকে না পেয়ে তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে আটক করা হয়।

অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমানজুড়ে শিশুদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত এবং স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার বিষয়েও উদ্বেগ জানান ১৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলটি।

মিয়ানমারের হাসপাতাল, স্কুল ও ধর্মীয় সংস্থা দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর দখলে থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনও হাতে রয়েছে বলে জানায় কমিটি। সেনা অভিযানে ওইসব স্থাপনা পরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ওতানি সতর্ক করে বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে পুরো এক প্রজন্ম শিশু ভয়াবহ শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’

১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই দিনই গ্রেপ্তার হন শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ তৎকালীন ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।

গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবিতে ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারজুড়ে আন্দোলনে নামে হাজারো মানুষ। বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় প্রাণ হারায় প্রায় এক হাজার মানুষ।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আসিয়ান

রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় মিয়ানমারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। পাশাপাশি ...

ফিলিস্তিনপন্থি গ্রুপকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন টিউলিপ

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রো-প্যালেস্টাইন কর্মসূচির সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবে ...