আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২/০৭/২০২৪ ২:৫৭ পিএম

ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা এবং গত প্রায় আড়াই বছরে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার জান্তা বাহিনী এখন মিয়ানমার রাষ্ট্রকে ধ্বংসের চেষ্টা শুরু করেছে। জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ এ সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মিয়ানমারের হালনাগাদ পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘(মিয়ানমারের) জান্তা এখন ব্যাপক চাপে রয়েছে। তারা জনবল, সামরিক সরঞ্জাম এমনকি ভূখণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণও হারাচ্ছে; কিন্তু তারপরও নমনীয় হচ্ছে না। ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া তো দূর, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আপস রফাতেও যাচ্ছে না।’

টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে মিয়ানমার

‘আবার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হামলাও প্রতিহত করতে পারছে না। গত প্রায় ১০ মাস ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জান্তা বাহিনী এবং তাদের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। এসব হামলার জবাবে জান্তা বাহিনী যেসব পাল্টা হামলা চালাচ্ছে, তাতে মারা যাচ্ছে মূলত বেসামরিক লোকজন।’

‘যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মিয়ানমার নামে কোনো একক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব আর থাকবে না। এ ব্যাপারটি জান্তাও বুঝতে পারছে; কিন্তু তারপরও তারা শান্তি স্থাপনে উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাদের এই ভূমিকা মিয়ানমারের জন্য ধ্বংস ডেকে আনবে।’

প্রসঙ্গত, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সেনা বাহিনীর সংঘাতের জেরে মিয়ানমার যে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে— সে আশঙ্কা গত বছরই জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মিন্ত সোয়ে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে এক উচ্চপর্যায়ের রাষ্ট্রীয় বৈঠকে জান্তাপ্রধান ও অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের তিনি বলেছিলেন, মিয়ানমারজুড়ে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে— তা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে মিয়ানমারের বেশ কিছু অঞ্চল স্বাধীনতা ঘোষণা করবে।

সম্ভাব্য সেই বিপদ ঠেকানোর জন্য জান্তাকে সাধারণ জনগণের সমর্থন আদায়ে তৎপর হওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার সেসব পরামর্শ আমলে নিয়েছে— এমন কোনো নজির এখন পর্যন্ত দেখা যায়ানি।

বৃহস্পতিবারের বক্তব্যে টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, গত ছয় মাসে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য কের জান্তা বাহিনীর পরিচালিত হামলায় মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশের বহু স্কুল, হাসাপাতাল এমনকি বৌদ্ধ মঠ ও সন্ন্যাসীদের আশ্রমও ধ্বংস হয়ে গেছে।

‘আমরা এখানে বসে যেমনটা ভাবছি, মিয়ানমারের বর্তমান অবস্থা তারচেয়েও অনেক, অনেকগুণ খারাপ,’ নিজ বক্তব্যে বলেন টম অ্যান্ড্রুজ।

সূত্র : এএফপি

পাঠকের মতামত

বৈশ্বিক অনুদান কমায় রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে শিশু শিক্ষার পরিস্থিতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান ...

যে কারনে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ট্রাম্প

এবার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। পাবলিকান আইনপ্রণেতা ...

ট্রাম্পের অনুরোধে ইরানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছে কাতার

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তেহরানকে রাজি করাতে মধ্যস্থতা করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ...