প্রকাশিত: ১৪/০৫/২০১৮ ১০:২৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৫৭ এএম

নিউজ ডেস্ক::

আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের উদ্দেশে যা বলেছেন তা পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো-

ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ আসসালামুআলাইকুম।

আমরা আজকে এখানে কথা বলবো মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে।

আপনারা জানেন যে, র‌্যাব ফোর্সেস তার ম্যান্ডেটরির অংশ হিসেবে শুরু থেকে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এবং এ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বিগত ১৪ বছর এ অদ্যাবধি র‌্যাব ৬৮ হাজার ৪শ ৯৮ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে এবং এ পর্যন্ত র‌্যাব ১ হাজার ৭শ কোটি টাকার উপরে মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে প্রায় পৌনে দুই হাজার কোটি টাকার মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে।
আপনারা জানেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একাধিক স্থানে মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে। সাম্প্রতিককালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দিয়েছেন বিশেষ করে আমরা গত ০৩ মে র‌্যাব ফোর্সেস এর রেইজিং ডে উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী র‌্যাব ফোর্সেস কে নির্দেশনা দিয়েছে। সেই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ০৪ মে থেকে মূলত বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে অপারেশনে আমরা নিয়োজিত হয়েছি এবং গত ০৯ দিনে আমরা ১৪ শ ১৫ জন ব্যবসায়ী এবং মাদক সেবীকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে আমরা সাজা প্রদানের ব্যবস্থা করেছি। এ সময় মোবাইল কোর্টে ২০ লক্ষ এর বেশি টাকা আর্থিক জরিমানা করেছে। এই সমস্ত অপরাধী কাছ প্রায় ১৫ কোটি মূল্যের মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ১৪শ লোকের কনভেকশনের বাহিরে ৩৮১ জনকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলায় রুজু করা হয়েছে। আমরা এই অপারেশনটাকে কন্টিনিউ করতে চাই এবং সেজন্য আমার সবার সহযোগিতা চাই।

আমাদের এই অপারেশনের কার্যক্রম হবে মূলত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনস্পট শাস্তির ব্যবস্থা করা।

কারণ আমরা যারা নিয়মিত মামলা যেখানে প্রয়োজন সেখানে অবশ্যই আমরা করবো। প্রাইয়োরিটি থাকবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা প্রদান কারণ আমরা জানি ব্যাকলকের কারণে নিয়মিত মামলা যেখানে এ্যাভওয়েট করা যায় সেখানে না যাওয়ায় বেটার কারণ অনেক সময় লাগে বিচারের জন্য। আর সেখানে আইন অনুযায়ী আমাদেরকে নিয়মিত মামলায় যেতে হবে সেখানে অবশ্যই আমরা নিয়মিত মামলায় যাবো। কিন্তু আমাদের প্রাইয়োরিটি থাকবে যাতে করে অনস্পট কনভেকশন দেওয়া যায় এবং সেই সঙ্গে নিয়মিত মামলা রুজু করা হবে এবং আইনে যা যা অনুমোদন করে আমরা সমস্ত মেজার নিয়ে আমাদের এই অনলাইন অপারেশনকে বলবতঃ এবং কার্যকর রাখবো।
আমরা প্রত্যাশা করবো যে যারা ড্রাগ গ্রহণ করে, তারা ড্রাগ গ্রহণ করা ছেড়ে দিবেন; যারা খুচরা বিক্রি করে, তারা বিক্রি বন্ধ করে দিবেন; যে সমস্ত লোকজন এই ড্রাগের হোল্ডার, ডিলার হিসেবে কাজ করেন এবং খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে ডিস্ট্রিব্রিউট করেনে তারাও সেটি ছেড়ে দিবেন; যারা বাহির থেকে আমার দেশে ড্রাগ নিয়ে আসেন তারাও সেটা বন্ধ করবে এবং খুচরা ব্যবসায়ী, ডিলার এবং স্মাগলার যাদের কাছে যেসমস্ত অবিক্রিত ড্রাগ আছে আমার এ্যাডভাইজ করবো তা আমাদের ক্যাম্পের আশেপাশে ফেলে রেখে যাবেন ভালো হবে।

আর একই সঙ্গে আমরা ধন্যবাদ জানাইতে চাই সারা বাংলাদেশ ব্যাপী জেলা প্রশাসনকে তারা তাদের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করছে আগামী দিনগুলোতে সারা বাংলাদেশে জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় প্রশাসনের সামর্থন আমরা প্রত্যাশা করবো। আমাদের সমস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াং, দেশ প্রেমিক।

আমরা চাইবো এই যে দেশের যে ভয়াবহ আগ্রসন, সে আগ্রাসন থেকে নিস্তার পেতে আমরা সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করবো। একই সঙ্গে আমরা বিচারিক কর্মকর্তা যারা আছেন তাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করবো। জঙ্গি এবং মাদক আর দশটা স্বাভাবিক অপরাধের মতো অপরাধ নয় এই বিষয়ে আমরা সম্মানিত বিচারিক কর্মকর্তাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।

আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করবো ‘ল’ ইয়ারস, আইনজিবী, প্রসিকিউটর, কোর্ট স্টাফ যাতে করে এই মাদকের যারা ব্যবসা করে যারা মাদকের ডিলার, যারা স্মাগলার এবং যারা মাদক সেবী তারা যেন আইনের কোন অপব্যবহার করতে সুযোগ না পায়। একই সঙ্গে আমরা জানি এই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অধীন সুরক্ষা বিভাগ আমাদের পুরাতন যে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন আছে সেটিকে হালনাগাদ করার কাজে নিয়োজিত আছে আমরা অনুরোধ করবো যত দ্রুত সম্ভব আরো কঠোর মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন আমাদেরকে অনুমোদনের ব্যবস্থা করে যাতে করে সেটাকেও আমরা দ্রুত প্রয়োগ করতে পারি।

আমাদের মাদক দ্রব্য পরিবহনের ক্ষেত্রে কমার্শিয়াল ট্রান্সপোর্টের পাশাপাশি কিন্তু অনেক সময় আমরা দেখি সরাকারী-বেসরাকারি ট্রান্সপোর্ট ব্যবহৃত হয়। যখন এই সরাকারী-বেসরাকারি ট্রান্সপোর্টগুলো যারা ব্যবহার করেন তারা ব্যবহার করা পড়ে এই গাড়ি গুলো কোথায় যায়, ড্রাইভারগুলো কোথায় কি করে কোন কাজে ব্যবহার করে যারা গাড়ির মালিক আছে যারা গাড়ি ব্যবহার করেন তাদের প্রত্যেককে আমি অনুরোধ করবো যাতে করে কোন ধরনের প্রাইভেট বা পাবলিক গাড়ি যাতে করে এই ধরনের ট্রান্সপোর্টে ব্যবহার হতে না পারে।

এটি একটি জাতীয় সমস্যা আমরা সে কারণে সমগ্র দেশবাসীর সমর্থন প্রত্তাশা করি, আমরা সকল শিক্ষকের সমর্থন চাই, আমরা ছাত্রদের সমর্থন চাই, আমরা সকল অভিবাবকবৃন্দের সমর্থন চাই, আমরা সকল পলিটিকাল পার্টির সার্পোট চাই, আমরা কমিউনিটি লিডারদের সার্পোট চাই, আমরা ধর্মীয় নেতা ,ইমামদের সমর্থন চাই, আমরা সহযোগিতা চাই সিভিল সোসাইটি, রাইটার, আর্টিস্ট সকল শ্রেণী পেশার মানুষদের আমরা সমর্থন চাই যাতে করে এটির আমরা শিকড়, নিগড় উদ্ঘাটন করতে পারি।

আমরা জানি বাংলাদেশ অনেক ব্যক্তি ও এনজিও প্রতিষ্ঠান আছে যারা মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে কাজ করেন এবং পুনর্বাসনে লক্ষ্যে কাজ করনে আমরা সেই সকল ব্যক্তি এবং এনজিও সাথে একত্রে কাজ করতে চাই। যাতে করে এটি সর্বব্যপী একটি উদ্যোগ হতে পারে আমরা সেই সমস্ত এনজিও ও ব্যক্তিদের সাথে কাজ করতে চাই। আমরা একই সঙ্গে যারা সোসাল মিডিয়াতে যারা এক্টিভিস্ট ফেইসবুক, টুইটার, ব্লক তাদের সমর্থন চাই। যাতে করে ফেইসবুক, টুইটার, ব্লক এবং সোসাল মিডিয়াতে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে একটি কার্যক্রর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পার। সে কারণে আমরা যুব সামাজে বেশি বেশি তৎপর, এক্টিভিটসরা তৎপর আমরা তাদের সমর্থন চাই।

আমরা সমর্থন চাই বিগ কর্পোরেশ, ব্যাংক ফিন্যানসিয়াল, ইন্ড্রাসটিয়ালিস্ট যারা সিএসআর করেন তারা এই সুযোগে যেনো এই প্রচার প্রচারণায় যোগদান করতে পারেন যাতে করে এই কার্যক্রম শক্তিশালী হবে। ফাইনালি চুড়ান্তভাবে আমরা আপনাদের সমর্থন চাই ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া “আপনার ছাপান এবং আপনারা দেখান” আমরা সেখানেই যাবো এবং ধ্বংস করবো। আমাদের কিভাবে জানানো যাবে।

আপনার জানেন যে, আমাদের “রিপোর্ট টু র‌্যাব” নামে একটি অ্যাপ রয়েছে তার মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাবে, আমাদের র‌্যাব সদর দপ্তরের নিজস্ব ফেইসবুক রয়েছে এবং ১৪টি ব্যাটালিয়নে নিজস্ব ফেইসবুক রয়েছে মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাবে, আমাদের ওয়েব সাইটের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা যাবে।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি জাতীয় ঐক্ব্য সৃষ্টি করতে পারলে, সবার সমর্থন যদি আমরা একত্রিত করতে পারি তাহলে ইতিপূর্বে আমরা অনেক বড় বড় অনেক অর্জন করেছি এবং মাদককে নির্মূল করাও তেমন দুরহ হবে না। ধন্যবাদ।

পাঠকের মতামত

কঠোর নির্দেশনার পরও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা ছাড়ছে না ভোটের মাঠ

সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে কঠোর নির্দেশনা ...

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের নিতে জাহাজ আসবে এ সপ্তাহেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফের ...