প্রকাশিত: ০৪/১১/২০১৬ ৯:১৯ পিএম , আপডেট: ০৪/১১/২০১৬ ৯:১৯ পিএম

tupaতোফায়েল আহমদ::

উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের সুশিল সমাজের একজন প্রতিনিধি তিনি। ভদ্রলোকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম-কেন প্রিয় নেতার জন্য আবাল-বৃদ্ধ বণিতা রাস্তায় নেমে আসলেন না। তার সোজা জবাব-এখন মানুষ অনেক সচেতন। হুট করেই ঘর থেকে কেউ বের হয় না। একবার হলেও চিন্তা করে। তিনি বললেন, দেখুন আমাদের এমপি আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে তার কোন রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক বা সামাজিক প্রতিপক্ষ মামলা করেনি। মামলার বাদী হচ্ছে দূদক। মামলার স্বাক্ষীদেরও কেউ প্রতিপক্ষ নয়। তদুপরি মামলাটির জন্য কেউ অভিযোগও করেননি।

তারপরেও উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের সরকার দলীয় এমপি আবদুর রহমান বদি তিন বছরের জন্য কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। অথচ মামলাটি নিয়ে তাঁর সাজা হবার জন্য কোন প্রতিপক্ষের তদবিরও ছিলনা। তবুও একজন এমপি দন্ডিত হলেন। সুশিল সমাজের এই প্রতিনিধি বললেন-দেখুন এমপি সাহেব নিজের দেয়া গোলেই পরাজিত হয়েছেন। অর্থাৎ আতœঘাতি গোল। এমপি বদি নিজের সহায়-সম্পদের একটি হিসাব দাখিল করেছিলেন। সেই হিসাবের সাথে দেয়া নিজের হলফনামাটিই উনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার উপাদান এবং স্বাক্ষ্য-প্রমাণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

এমপি বদির প্রদত্ত এই হলফনামার তথ্য-উপাথ্য সংগ্রহ করেছে সরকারের দূর্ণীতি দমন কমিশন (দূদক)। দূদকের তদন্তকারি দলের পরিদর্শকরা এমপি বদির হলফনামায় উল্লিখিত বিবরণ তদন্ত করেছেন। সেই সাথে হলফনামায় যা উল্লেখ করা হয়নি সেইসব অনুসন্ধানের মাধ্যমে উপাস্থাপন করেছেন আদালতে। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোকে হিসাবে কিছু দিয়েছেন হয়তোবা কিছু গোপন করেছেন। এক কথায় এমপি বদির নিজের দেয়া হলফনামাটিই তাঁকে তিন বছরের কারাদন্ড দিতে মাননীয় আদালতকে আইনত বাধ্য করেছে। এ কারনেই তিনি দন্ডিত।

আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কথা ঘোষণা করেছিল তখন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা এক যোগে হুংকার ছেড়েছিলেন। জামায়াত-শিবির রগকাটা আর সহিংসতায় কি রকমের নৃশংসতায় যেতে পারে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই তাদের হুংকারে দেশবাসী শংকিত ছিল বটে। তেমনি বদি সমর্থকরা হংকার ছেড়েছিলেন এমপি বদির বিরুদ্ধে যখন দূদক মামলা দায়ের করে তখন। সেই হুংকার দৃশ্যমান হয়েছিল যখন তিনি দূদকের মামলায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে কক্সবাজার বিমান বন্দরে এসেছিলেন। উখিয়া-টেকনাফের মানুষ তাঁকে বিমান বন্দরে সেদিন সম্বর্ধিত করেছিলেন পাঁচ শতাধিক গাড়ি নিয়ে।

বিমান বন্দরে এমপি বদির সেদিনের সম্বর্ধণা দেখে অনেকেরই মন্তব্য ছিল-যদি তাঁর (এমপি বদি) কিছু হয় তাহলে খবর আছে। গত বুধবার বদির তিন বছরের সাজা হয়েছে। অর্থদন্ডও তিনি পেয়েছেন দশ লাখ টাকার। অনাদায়ে তাঁর শাস্তি আরো তিন মাসের। বলাবলি হচ্ছে-আওয়ামী লীগ সরকারের বলি এটি।এরি মধ্যে অনেক সময় পার হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ সরকারও ক্ষমতায় এসে একে একে যুদ্ধাপরাধীদের দন্ড দিয়েছেন। ফাঁসিও কার্যকর হয়েছে অনেকের। কিন্তু তাদের হুংকার হুংকারই থেকে গেছে। কথায় বলে-ভাগ্যবানের নৌকা চলে বালুচরেও আর ভাগ্যহীনের নৌকা সাগরেও আটকা পড়ে।-

লেখক-
তোফায়েল আহমদ,
কক্সবাজারে কর্মরত দৈনিক কালের কন্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার এবং আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও বিবিসি’র স্ট্রিঙ্গার।
ইমেইল: [email protected]

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...