ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১০/০৭/২০২৫ ৬:২৬ পিএম

বিশ্ব পর্যটন সূচকে পবিত্র মক্কা আন্তর্জাতিক পর্যটকদের গন্তব্য হিসেবে পঞ্চম এবং মদিনা মোনাওয়ারা সপ্তম স্থানে রয়েছে। সম্প্রতি সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রী ড. তাওফিক আল-রাবিয়া ‘দুয়ুফ আর-রাহমান’ নামে হজ ও উমরা পালনকারীদের নানাবিধ সুবিধা সম্বলিত কর্মসূচির পরিসংখ্যান প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান।

সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রীর দাবি, ‘২০২৪ সাল হজ ও উমরার দিক থেকে সৌদি আরবের জন্য ছিল ঐতিহাসিক। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মুসলিম এ বছর পবিত্র হজ ও উমরাতে পালনের জন্য সৌদি আরব সফর করেছেন।’ ‘দুয়ুফ আর-রাহমান’ কর্মসূচির প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর মোট ১ কোটি ৮৫ লাখ মুসল্লি হজ ও উমরা পালন করেছেন, যার মধ্যে ১ কোটি ৬৯ লাখই ছিলেন বিদেশি উমরাযাত্রী।

পরিসংখ্যানে এটা স্পষ্ট যে, ২০২৪ সালে উমরা পালনকারীর সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় ১০১ শতাংশ বেড়েছে, যা পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সৌদি সরকারের ‘ভিশন ২০৩০’-এর অধীনে পরিচালিত ‘দুয়ুফ আর-রহমান’ কর্মসূচির বিভিন্ন উদ্ভাবনী পদক্ষেপ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ডিজিটাল সেবা ব্যবস্থার ফলে এই অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে।

হজ ও উমরা পালনকারীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে এ বিশেষ কর্মসূচির আওতায় ৪০টিরও বেশি সরকারি সংস্থার সহযোগিতায় ৮৯টি উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে। এসব উদ্যোগে বাস্তবায়ন হার ছিল ৯৫ শতাংশ, যার মাধ্যমে পরিবহন, আনুষ্ঠানিকতা, নিরাপত্তা এবং ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের মতো প্রতিটি ধাপে উন্নয়ন নিশ্চিত হয়েছে।

বিশেষভাবে, মদিনার মসজিদে নববির রওজা শরিফে ২০২৪ সালে ১ কোটি ৩০ লাখ মুসল্লি প্রবেশ করেছেন, যেখানে ২০২২ সালে এটি ছিল ৪০ লাখ। মুসল্লিদের সন্তুষ্টি হার ৫৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা সেবা ব্যবস্থার উন্নতির সরাসরি প্রমাণ।

এই বছর ১ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক হজ ও উমরা মৌসুমে সেবা দিয়েছেন, যা ২০২২ সালের তুলনায় ১০ গুণ বেশি। এটি প্রমাণ করে, সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ও ধর্মীয় দায়বদ্ধতা অনেকটাই বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, হজ ও উমরা সেবায় জড়িত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ৩৩টি বৈদেশিক সফর হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বমূলক সমঝোতার মাধ্যমে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে।

প্রযুক্তিগত সেবার ক্ষেত্রে, ‘নুসুক’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ১০০টির বেশি ডিজিটাল সেবা চালু হয়েছে। ‘মক্কা রুট’ উদ্যোগে ৯ লাখ ৪০ হাজার মানুষ সুবিধা পেয়েছেন এবং ‘ইনায়া সেন্টার’ প্রায় ৩০ লাখ মানুষকে সেবা দিয়েছে। অনলাইন প্লাটফর্ম ‘নুসুক’ অ্যাপ এখন বিশ্বের লাখো মুসলমানের প্রধান হজ-উমরা সহায়ক অ্যাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ড. তাওফিক আল-রাবিয়া বলেন, ‘নুসুক কার্ড ছিল ১৪৪৫ হিজরি হজ মৌসুমের অন্যতম মাইলফলক। রওজা শরিফে ১৩ মিলিয়ন দর্শনার্থীর প্রবেশ ও ১৫টি নবী জীবনীভিত্তিক ঐতিহাসিক স্থান পুনরায় চালু করতে পারা- আমাদের সামষ্টিক সাফল্যের চিত্র।’ তিনি স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশংসা করে বলেন, ‘তারা ঈমান, আন্তরিকতা ও সৌদি মুসলিম রীতি অনুযায়ী অতিথিদের সেবা দিয়েছেন।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই অর্জন ৪০টির বেশি সংস্থার ধর্মীয় ও জাতীয় দায়বদ্ধতায় পরিচালিত সম্মিলিত উদ্যোগের ফল। আমি তাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই এবং ২০২৫ সালে আরও বড় সফলতা প্রত্যাশা করি।’

পাঠকের মতামত

স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিবাদ-বিচ্ছেদ লাগানো নিয়ে যা বলেছেন মহানবী (সা.)

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মান-অভিমান, মনোমালিন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে বর্তমানে অনেকে ব্যক্তিগত স্বার্থ, নিজের পছন্দ-অপছন্দ ও ব্যক্তি ...