
শামীমুল ইসলাম ফয়সাল
আদালতের নির্দেশে বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মা’মলা তদন্ত করতে গিয়ে এক বিচারপ্রার্থীর কাবিনের ক্ষতিপূরণ বাবদ ধার্য করা অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে উখিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ হোসেনের বিরুদ্ধে।
২০২১ সালের ২৮ জুন, উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হাছন আলীর মেয়ে বুলবুল আক্তারকে বিয়ে করেন একই এলাকার মীর জাফরের ছেলে আবুল কালাম।
সে সময়, রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে চার লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে দুই লক্ষ টাকা নগদ ও দুই লক্ষ টাকা বকেয়া রেখে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।
দুই বছর পর ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর
পারিবারিক কলহের জেরে কালাম, একতরফাভাবে তার স্ত্রী বুলবুল আক্তারকে রেজিস্ট্রি মূলে তালাক দিলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
বিষয়টি মীমাংসা করতে আদালত উখিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়কে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
পরে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে সমাজসেবা কর্মকর্তা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় বৈঠক, ক্ষতিপূরণ ধার্য করে করা হয় যার নিষ্পত্তি।
এই দম্পতির ঘরে রয়েছে একটি ছেলে সন্তান, ঐ সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ ১৮ হাজার টাকা এবং দেনমোহরের ২ লক্ষ টাকা সহ মোট ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়।
বুলবুলের প্রাক্তন স্বামী আবুল কালাম জানান, ” বিচার অনুযায়ী ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা আমি সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দিই, আমার কাছে প্রাপ্তিস্বীকার ও না-দাবিপত্র আছে ।”
বুলবুল আক্তারের পিতা হাছন আলীর অভিযোগ, তার কন্যাকে দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ হোসেন ও তার অধীনস্থ কর্মচারী নজরুল ইসলাম এই টাকা গ্রহণের পরবর্তী সপ্তাহে বাকী ২৮ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বললেও অদ্যাবধি সে টাকা ফেরত পাননি বলে জানান হাছন আলী।
তিনি আরো জানান, ‘ বিচার মীমাংসা হওয়ায় খরচ বাবদ বাড়তি ৪ হাজার টাকা দাবী করলে সেটিও সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দেওয়া হয় তবে একাধিকবার যোগাযোগের পর পাওনা টাকা দিচ্ছে না তারা।’
বিচার মীমাংসার কথা স্বীকার করে পাওনা টাকার জন্য নিজের কার্যালয়ে ভুক্তভোগীকে যোগাযোগ করতে বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন আল মাহমুদ হোসেন।
এপ্রসঙ্গে সমাজসেবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক কাজী নাজিমুল ইসলাম বলেন, ” বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি, জেলা কর্মকর্তাকে জানানো হবে। এধরণের কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয়, যদি সত্য হয় অবশ্যই বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, ” ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে, সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর উখিয়ায় যোগদান করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল মাহমুদ হোসেন।
পাঠকের মতামত