প্রকাশিত: ৩০/০৪/২০১৮ ৬:৫৯ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:২৮ এএম

ডেস্ক নিউজ : বজ্রাঘাতে নারায়ণগঞ্জে চার জন, জামালপুরে দুই জন, পাবনায় একজন, মৌলভীবাজারে দুই জন, রাজশাহীতে দুই জন ও হবিগঞ্জে একজনসহ মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩০ এপ্রিল) তারা মারা যান। এর আগে রবিবার (২৯ এপ্রিল) বজ্রাঘাতে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

নারায়ণগঞ্জ: সোমবার দুপুরে রূপগঞ্জে তিন জন ও সোনারগাঁয়ে একজনসহ মোট চার জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে তিন জন কৃষক। আহত হয়েছেন আরও একজন।

রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, দুপুরে উপজেলার তারাব পৌরসভার টেটলাব গ্রামের ফরহাদ (১৫) একটি বিলে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে নিহত হয়। সে মাদাপীরপুর জেলার শিবচর এলাকার জলিল শেখের ছেলে। একই সময় ভোলাব ইউনিয়নের টাওড়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে কৃষক রফিকুল ইসলাম (৩৪) জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে নিহত হন।  তার সঙ্গে থাকা কামাল মোল্লার ছেলে হাশেম মোল্লা (৪০) আহত হন। পরে আহত হাশেম মোল্লাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুন নাহার জানান, বজ্রপাতে আহত হামেশ মোল্লাকে গুরুতর অবস্থায় এলাকাবাসী নিয়ে এলে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় হাশেম মোল্লার মৃত্যু হয়।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, একই সময়ে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মুছারচর গ্রামের কুদ্দুছ মিয়ার ছেলে ওবায়দুল (৩২) জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে নিহত হন। এসময় তার সঙ্গে থাকা নুরুল ইসলামের ছেলে সাদেক (৩৫) আহত হন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে, তিনি আশঙ্কামুক্ত।

জামালপুর: জামালপুরে বজ্রপাতে দুই জনের মৃত্যু ও একজন আহত হয়েছেন। সোমবার সকালে জেলার ইসলামপুর ও সরিষাবাড়ি উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের  দক্ষিন  চিনাডুলী গ্রামের আবদুস ছাত্তারের ছেলে বকুল মিয়া (২৫) ও একই গ্রামের বাবর আলীর ছেলে রেজাউল করিম ওরফে আব্দুর রাজ্জাক (৪২) ছোট নৌকাযোগে যমুনা নদী পথে গুঠাইল বাজারে যাচ্ছিলেন। তখন বাজারের ঘাটে তাদের ওপর বজ্রপাত ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলেই বকুল মিয়া মারা যান ও গুরুতর আহত হন আব্দুর রাজ্জাক। চিনাডুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এলাকাবাসী আহত রাজ্জাককে উদ্ধার করে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করে। ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীনুজ্জামান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অপরদিকে সরিষাবাড়ি উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের শ্যামের পাড়া গ্রামের আলিফ উদ্দিনের ছেলে  কৃষক হাবিবুর রহমান (৩৫) সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। মহাদান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জুয়েল জানান, শ্যামেরপাড়া গ্রামের আলিমুদ্দিন মন্ডলের ছেলে হাবিবুর রহমান ক্ষেতে ধান কাটছিল। এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সরিষাবাড়ি থানার ওসি রেজাউল ইসলাম খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পাবনা: পাবনার ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। বজ্রপাত ও অঝোর বৃষ্টিও ছিল। জেলার ঈশ্বরদীতে বৃষ্টির সময় বজ্রাঘাতে অজ্ঞাত একজনের মৃত্যু হয়েছে।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী হঠাৎ পাড়া এলাকায় বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে তিনি মারা যান। পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম জানান, সোমবার সকালে বৃষ্টির সময় ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি হঠাৎ পাড়ার একটি আম গাছের নিচে ওই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে পাকশী পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস জানায়, পাবনায় আজ ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঝড়ের গতিবেক ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার।

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আদমপুর ইউনিয়নের উত্তরভাগ এলাকায় গরু চরাতে গিয়ে তমিজ উদ্দিন (২৪) নামের একজন বজ্রাঘাতে মারা গেছেন। সোমবার দুপুরে তিনি মারা যান। কমলগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার লাখাইছড়া ছড়া চা বাগানে লেবু বাগানে কাজ করার সময় অজয় গোয়ালা (২৭) নামের আরেকজন বজ্রাঘাতে মারা যান। এ সময় আহত হয়েছেন আরও চার জন। আহতদেরকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালের ডা. আব্বাছ উদ্দিন বলেন,  ‘গুরুতর আহতাবস্থায় রিপনকে (১৭) মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর তিন জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হবে। তারা সবাই লাখাইছড়া চা বাগানের বাসিন্দা।

রাজশাহী: জেলার গোদাগাড়ী ও পুঠিয়ায় বজ্রপাতে দুই জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-গোদাগাড়ী উপজেলার আইনাপুকুর গ্রামের বাবলু মিয়া (৪৫) ও পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের আরেজ উদ্দিনের ছেলে ইয়াকুব আলী (৪৫)।

গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান আলী আজম তৌহিদ জানান, সোমবার সকালে কৃষক বাবলু মিয়া জমিতে ধান কাটছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনিও ঘটনাস্থলেই মারা যান।

পুঠিয়া থানার ওসি সায়েদুর রহমান জানান, সোমবার সকালে উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে ইয়াকুব আলী বাড়ির পাশে বেগুন ক্ষেতে কীটনাশক দিচ্ছিলেন। এসময় ওই এলাকায় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। তার লাশ পারিবারিকভাবে দাফনের প্রক্রিয়া চলছে।

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার তেল কুমার হাওরে বজ্রপাতে শামসুল হক (৩৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল দুপুরে এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। নিহত শামসুল হক বানিয়াচং উপজেলার জাদুকর্ণপাড়ার মৃত গাজী রহমানের ছেলে। বানিয়াচং থানার ওসি মোজাম্মেল হক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারের ট্রেন দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে ফিরল শিশু আতাউল্লাহ

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চারজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আতাউল্লাহ ...

কক্সবাজারে দেয়ালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘হটাও ইউনূস, বাঁচাও দেশ’ স্লোগান, তোলপাড়

কক্সবাজারের অজ্ঞাত স্থানে দেয়ালে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ‘হাঠাও ইউনুস, বাঁচাও দেশ’ স্লোগান লেখা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা ...