প্রকাশিত: ২৭/০৪/২০১৮ ১১:২৭ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:৩৫ এএম

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,টেকনাফ :
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে ইয়াবা পাচারের পাশাপাশি মাদক সেবনকারী ও আসক্তদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে যুব সমাজ এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কম বয়সী ছাত্ররা।

বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়, ইদানিং টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশীর ভাগ তরুণ যুবক মাদক পাচারের সাথে জড়িত হওয়ার পাশাপাশি মাদক সেবনে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাদক সেবনকারীদের দেখা না গেলেও সন্ধ্যার পর তাদের দেখা মিলে।

নাম প্রকাশ্যে অনিশ্চুক টেকনাফ উপজেলা ও পৌরসভার বেশ কিছু নির্দিষ্ট স্থানে মাদক সেবনকারীদের আড্ডা চোঁখে পড়ে এবং বিভিন্ন প্রকার মাদক সেবনের আড্ডায় মেতে উঠে।

টেকনাফ পৌরসভার বেশ কয়েকটি হোটেল ও নিজস্ব প্রতিষ্টানেও সন্ধ্যার পর মাদক সেবনকারীদের আড্ডা বসে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

যতই দিন যাচ্ছে ততই মাদক আসক্তদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হুমকি ও আতংকের মধ্যে রয়েছে আগামী প্রজন্ম ও শিশু-কিশোরদের অভিভাবকরা।

কারণ এই ভাবে দিনের পর দিন মাদক পাচার ও মাদক সেবনকারীদের সংখ্যা বেড়ে গেলে আগামী প্রজন্মকে মাদকের আগ্রাসন থেকে বাচাঁতে ও রক্ষা করতে খুবেই কষ্টকর হয়ে পড়বে।

এদিকে মাদক পাচার প্রতিরোধ ও মাদক সেবনকারীদের আইনের আওয়াতাই নিয়ে আসতে কঠোর ভূমিকা পালন করছে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা।

সেই ধারাবাহিকতায় গত দেড় বছরের ব্যবধানে প্রায় দুই শতাধিক যুবকে মাদক সেবনের দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতের সাজা নিয়ে কারাগারে রয়েছে।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মাদকাসক্ত বেশ কয়েকজন যুবকের সাথে কথা বলে জানা যায়,তারা মাদক ছাড়তে চাই, কিন্তু মাদক তাদের ছাড়ে না।
তারা আরো বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা মরননেশা ইয়াবাসহ দেশী-বিদেশী তৈরী হওয়া এমন কোন মাদক নেই, যা আমরা সেবন করিনি। বলতে গেলে কোন মাদকেই আমাদের সেবন থেকে বাদ পড়েনি।

তারা আরো বলেন, যখন মাদক সেবন করি তখন বউ-বাচ্চাসহ দুনিয়াদারীর কোন কিছুই খেয়াল থাকে না। এই মাদক সেবন করতে গিয়ে পরিবারের অনেক টাকা ক্ষতি করেছি এবং করে যাচ্ছি, একথাগুলো নির্বিধায় বলে গেলেন মাদকে আসক্ত যুবকরা।

খবর নিয়ে আরো জানা যায়, টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় মাদক সেবকদের খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার শিক্ষিত,সুশীল-সমাজসহ সর্বস্থরের মানুষ।

পাড়া-মহল্লায়,গ্রামেগঞ্জে যত ধরনের অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে,সমস্ত অপরাধের পেছনে মাদকাসক্ত ব্যাক্তিরা জড়িত।

কারণ এলাকার প্রভাবশালী ও অপরাধ কর্মকান্ডের চক্রান্তকারীরা মাদকাসক্তদের মাদক সেবন করিয়ে অল্প টাকার বিনিময়ে অপরাধ সংঘঠিত করার জন্য উৎসাহিত করে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

এই মাদক সেবী অপরাধীচক্র চুরি, ছিনতাই, জবরদখল, অপহরণ, ডাকাতি ও খুনসহ এমন কোন অপরাধ নেই তারা ব্যবহার হয় না।

টেকনাফ উপজেলার অপরাধ দমনে থানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিমাসে ১০/১৫ জন মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে আটক এবং অভিভাবকরা আইনের হাতে তুলে দিচ্ছে। অনেকেই পাচ্ছে ভ্রাম্যমান আদালতের সাজা, আবার বিভিন্ন মাদক মামলার আসামী হয়ে অনেক অপরাধী চলে যাচ্ছে কারাগারে। এদের মধ্যে বেশির ভাগ মাদক আসক্ত যুবক হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারের।

এব্যাপারে টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান, টেকনাফ উপজেলার মাদক পাচার ও মাদক সেবনকারী হার বেড়েই যাওয়ায় এই বিষয় গুলো জাতীর জন্য খুবই দু:খজনক। তিনি আরো বলেন, টেকনাফ উপজেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল খুবেই কম তার পরও এলাকারবাসীর সহযোগীতা পেলে যেকোন মাদক পাচার প্রতিরোধ ও মাদক সেবনকারীদের ধরতে আমরা অভিযান পরিচালনা করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকবো।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বাথরুমে ফেলে যাওয়া সেই নবজাতকের ঠাঁই হল নার্স মিনারার কোলে

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাথরুম থেকে উদ্ধার হওয়া ২ দিনের ফুটফুটে নবজাতককে দত্তক নিলেন ...

ঈদগাঁওতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ইউপি নির্বাচনে কারসাজি ও দুর্বৃত্তায়ন সহ্য করা হবেনা

আতিকুর রহমান মানিক, কক্সবাজার কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেছেন, দীর্ঘ আট বছর পর ...