আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১/১২/২০২৩ ৮:৩১ এএম
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি ট্রাক বহর ছবি: রয়টার্স

চীনের সীমান্তবর্তী লাউক্কাই শহরে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও বিরোধী বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই আরো তীব্র হচ্ছে। নাগরিকদের শহর ছেড়ে যেতে বেইজিংয়ের আহ্বান জানানোর পর থেকেই যুদ্ধ আরো বাড়ছে। খবর ইএফই।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থান পরিচালনার পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ভূরাজনৈতিকভাবে দেশটিকে আরো সংকটজনক অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে। বিরোধীদের বক্তব্য, শহরজুড়ে বিমান হামলা বাড়িয়েছে সামরিক জান্তা।
লাউক্কাইয়ের এক বাসিন্দা মিজিমা নিউজ সাইটকে জানান, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেখানকার অধিবাসীদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে বোমা হামলা চালাচ্ছে। নভেম্বরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ বাসিন্দা ঘরছাড়া হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোমা হামলার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ হয়েছে।

শহরের বেশির ভাগ অংশ মিয়ানমারের ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে তিনটি গেরিলা বাহিনী ২৭ অক্টোবর থেকে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু করেছে তাদের একটি হলো ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি। বিদ্রোহীদের এ বাহিনী সামরিক জান্তার জন্য প্রধান প্রতিবন্ধকতা। ক্যাসিনোর পাশাপাশি মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সাইবার স্ক্যাম চালাতে বাধ্য করার অন্যতম স্থান হচ্ছে লাউক্কাই। এই একটি কারণে আরাকান আর্মি ও তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি দেশটির সামরিক জান্তার সঙ্গে লড়াইয়ের পাশাপাশি অপারেশন ১০২৭ পরিচালনা করছে।

বৃহস্পতিবার রাতে বিমান হামলা শুরুর আগে মিয়ানমারের চীনা দূতাবাস তার নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব শহর ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। দূতাবাসের ফেসবুক ও উইচ্যাট অ্যাকাউন্টে অঞ্চলটির নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে শহর ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়।

চীন মিয়ানমারের জান্তা ও বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখায় সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। দেশটি দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু চলতি মাসের মাঝামাঝিতে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছালেও তা তাৎক্ষণিকভাবে ভেস্তে যায়।

অন্যদিকে আসাম রাইফেলসের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে থাকা বেশকিছু ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী। এরপর কাছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৫-এর বেশি সদস্য মিজোরামের লংটলাই জেলায় পালিয়ে গেছে।

কর্মকর্তা জানান, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে লংটলাই জেলার তুইসেন্টল্যাংয়ে আসাম রাইফেলসে চলে আসে। মূলত আন্তর্জাতিক সীমান্তে থাকা ক্যাম্পগুলো আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার পর তারা অঞ্চল ছেড়ে পালায়। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র বন্দুকযুদ্ধ চলছে।’ মিজোরামে প্রবেশকারী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য গুরুতরভাবে আহত হয়েছিল এবং আসাম রাইফেলস তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সৈন্যরা এখন সীমান্তের কাছে লংটলাই জেলার পারভাতে আসাম রাইফেলসের হেফাজতে রয়েছে। তিনি জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো সৈন্যদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। সুত্র: বণিক বার্তা

পাঠকের মতামত

ইরানের ভয়ে তটস্থ ইসরায়েল!

ইসরায়েলে বড় ধরনের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা আসন্ন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ...