
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা টেস্টে বৃহস্পতিবার (১৪ মে) দুইজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর (Forcibly displaced myanmar Nations-বলপূবর্ক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক) করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার কথা বলা হলেও মূলতঃ একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। অপরজন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর একজন বড়ুয়া সম্প্রদায়ের লোক। তিনি উখিয়াতে একটি ওষুধের দোকান করেন। চিকিৎসাসহ বহুমুখী সেবা পেতে ওই বড়ুয়া সুকৌশলে নিজে রোহিঙ্গা সেজে কুতুপালং ক্যাম্পে এমএসএফের হাসপাতালে গিয়ে তার স্যাম্পল টেস্ট করতে দিয়েছিলেন।
কক্সবাজার আরআরআরসি অফিসের স্বাস্থ্য সমন্বয়কারি ডা. আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতাল থেকে পাঠানো কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের নমুনা টেস্ট রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের স্থানীয় লোক জনৈক বড়ুয়াসহ দুইজনকে প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থী বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে ক্যাম্প ইনচার্জ খলিলুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (১৪ মে) টেস্টে করোনা ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট আসা জনৈক বড়ুয়ার নামীয় কোন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে নেই। পরে এ বিষয়ে আরো খোঁজাখুঁজি করে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জানা যায়, ওই বড়ুয়া করোনা রোগী এদেশের স্থানীয় একজন নাগরিক।
ডা. আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উখিয়ার ইউএনও মোঃ নিকারুজ্জামান এবং উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন বড়ুয়াকে অবহিত করেছেন।

এ বিষয়ে উখিয়ার ইউএনও মোঃ নিকারুজ্জামান বলেছেন, আরআরআরসি অফিসের স্বাস্থ্য সমন্বয়কারীর কাছ থেকে তিনি বিষয়টি জানার পর ওই করোনা রোগীকে খুঁজতে গিয়ে তাকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকায় তার বাড়িতে পাওয়া যায়। তবে তখন রাত সাড়ে ১১টা বেজে যাওয়ায় আপাতত এদেশের ওই নাগরিক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী করোনা রোগীকে তার নিজ বাড়িতে আইসোলেটেড করে রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, ওই রোগী যেহেতু কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা নন, তাই তাকে কোথায় চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে, তা সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমানকে বিষয়টি তাৎক্ষণিক অবহিত করা হয়েছে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান ১৫ মে বান্দরবানের সিভিল সার্জনের সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের বৃহস্পতিবার শনাক্ত হওয়া একমাত্র করোনা রোগী উখিয়া উপজেলার লম্বাশিয়া এলাকার ১ নম্বর ক্যাম্পের পশ্চিম ব্লকের বাসিন্দা। তাকে আইওএম এর ২ নম্বর ক্যাম্পের পশ্চিম ব্লকে স্থাপিত আইসোলেশন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রাথমিকভাবে নিয়ে আসা হলেও তাকে আবার সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ২ নম্বর ক্যাম্পের পশ্চিম ব্লকে স্থাপিত ব্র্যাকের আইসোলেশন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখানে তাকে রেখে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। একই সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একমাত্র করোনা রোগীর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসা আরো ৭ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে একই হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতে এনে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে জানান আরআরআরসি অফিসের স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা. আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া।
তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবারের সদস্য ও তাদের সংস্পর্শে আসা সকলকে চিহ্নিত করে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। ১৫ মে তাদের শরীরের স্যাম্পল সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে টেস্টের জন্য পাঠানো হবে বলে জানান ডা. আবু তোহা এম আর ভূঁইয়া
পাঠকের মতামত