

ভাবুন তো, কক্সবাজারের কুতুপালং বস্তির ঘিঞ্জি ছাউনির ভেতর জন্ম নেওয়া এক কিশোর, যার চারপাশে কেবল হতাশা আর অনিশ্চয়তা। মং সৈয়দুল্লাহ—সে ছিল হাজারো রোহিঙ্গা শিশুর মতোই ভাগ্যের কাছে পরাজিত। কাদায় ভরা সরু গলি, রোগ-শোক আর নোংরার মাঝেই তার শৈশব কেটেছে। স্কুলে যাওয়ার সুযোগ ছিল না, ভবিষ্যতের স্বপ্নও যেন ছিল অন্ধকার কুয়াশার মতো।
কিন্তু পৃথিবীর অদ্ভুত নিয়ম আছে—যে সবচেয়ে অন্ধকার থেকে উঠে দাঁড়ায়, তাকেই সবচেয়ে উজ্জ্বল আলোতে দেখা যায়। রিসেল্টমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে একদিন আমেরিকায় পৌঁছালো মং। তখনও কেউ ভাবেনি, এই ছেলেটিই একদিন জাতিসংঘের সদর দপ্তরে দাঁড়িয়ে কথা বলবে।
আর সত্যিই তাই হলো। নিউইয়র্কের জাতিসংঘ মঞ্চে সে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো মিয়ানমারের সেনাদের বর্বরতা আর আরাকান আর্মির নির্যাতনের কাহিনী শুনিয়ে বিশ্ব নেতাদের স্তব্ধ করে দিলো। যাদের কণ্ঠস্বর কেউ শুনতে চাইতো না, সেই অবহেলিত জাতির পক্ষেই আজ মুখ খুলেছে এক সময়ের বস্তির ছেলে।
আজ রোহিঙ্গারা পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। তারা যখন মংয়ের কথা শোনে, বুক ভরে ওঠে গর্বে। যে ছেলেটিকে একসময় কেউ গুরুত্ব দেয়নি, সে এখন লাখো মানুষের আশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই গল্প আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়—কাউকে কখনো ছোট করে দেখা যায় না। জীবনের লেখক আল্লাহ। তিনি যাকে ইচ্ছা বস্তি থেকে তুলে জাতিসংঘের মঞ্চে দাঁড় করান।

পাঠকের মতামত