উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭/১০/২০২৪ ১১:০৪ এএম , আপডেট: ০৭/১০/২০২৪ ১১:১৪ এএম

এম ফেরদৌস, উখিয়া
উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি’র অঘোষিত পিএস উখিয়ার মিলন বড়ুয়া সরকারি-বেসরকারি নিয়োগ বাণিজ্যে এমপির ডিও লেটার ব্যবহার করে গুনে গুনে ঘুষ নিতেন। তাকে ঘুষ দিতে না পেরে অনেক মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থী পুলিশের চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।

জানা যায়, উখিয়া পাতাবাড়ি এলাকার মিলন বড়ুয়া শিক্ষকতার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিগত সরকারের আমলে এমপি’র ডিও লেটার দিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন নিয়োগে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্য করে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ইয়াবার মাফিয়া খ্যাত সাবেক সাংসদ সদস্য তৎসময়ের উখিয়া-টেকনাফের ক্ষমতাধর ব্যাক্তি আব্দুর রহমান বদির একান্ত পিএস এবং তাঁর সাথে সু-সম্পর্ক থাকায় তাঁর ঘুষ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করতো না।

আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে স্বৈরাচারিক ক্ষমতা চালিয়ে মানুষের জমি দখল, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ,ঘুষ বাণিজ্য, ইত্যাদি অনিয়ম দুর্নীতির দায়ে আওয়ামী নেতাদের বিরুদ্ধে গনহারে একাধিক মামলা হলেও টাকার মিশনে বেঁচে গিয়েছিলেন বদির একান্ত পিএস এই মিলন বড়ুয়া।

অবশেষে তাঁর মুখোশ উন্মোচন করে নিয়োগ বাণিজ্যসহ তাঁর বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। সর্বশেষ গত ৪ই অক্টোবর আমিনুর ইসলাম হিরু নামে এক ব্যাক্তি বাদী হয়ে মিলন বড়ুয়াসহ ৯ জন কে আসামী করে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

অনুসন্ধান উঠে এসেছে, বিগত সরকারের আমলে ইয়াবার মাফিয়া খ্যাত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি’র ছত্রছাঁয়ায় মিলন বড়ুয়া পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, সরকারি বিভিন্ন প্রজেক্ট নয়-ছয় করে নামে-বেনামে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ ও নগদ অর্থ অর্জন করেছেন।

শুধু তাই নই, তাঁর নিয়োগ বাণিজ্য ছাড়াও রয়েছে আওয়ামীলীগের একক নির্বাচনে শিক্ষকতা ছেড়ে নৌকার পক্ষে নির্বাচন করে তার নিজের এলাকা পাতাবাড়ি কেন্দ্র থেকে ভোট ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা।

বদি’র বদৌলতে তিনি পেয়েছেন দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ। অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন উখিয়া নুরুল ইসলাম চৌধুরী টেকনিক্যাল কলেজের, অন্যদিকে ইনডেক্সধারী শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন টেকনাফ মৌলবী বাজার জমিরীয়া আলিম মাদ্রাসায়।

স্থানীয়রা বলছে, উখিয়া টেকনাফে হাজারো বেকার দিক-বেদিক ছুড়ছে, এদিকে একজন ব্যাক্তি দুই জায়গায় চাকরি দেখিয়ে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নিচ্ছে। এসব নিয়মবহির্ভূত কাজ সম্ভব করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি’।

মিলন বড়ুয়ার সাথে বদি’র দেহরম-মহরম সম্পর্ক। বদি উখিয়াতে আসা মাত্রই রেস্ট হাউস হিসাবে মিলন বড়ুয়ার বিলাশবহুল বাড়িটিই ব্যবহার করতো।

বদি’র ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিলন বড়ুয়া সরকারি বনবিভাগের জায়গায় গড়ে তুলেছেন এই বিলাসবহুল বাড়ি। সেখানে ছিল বদির জলসা ঘর। এমন তথ্যেও দিয়েছেন স্থানীয়রা।

মিলন বড়ুয়াকে ঘুষের টাকা দিতে না পেরে পুলিশের চাকরী বঞ্চিত এক যুবক বলেন, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ আবেদনে রাইটিং,ভাইভা,শারীরিক গঠনসহ সব পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। কিন্তু এমপি’র ডিও লেটারের মার্ক করা ব্যাক্তি ছাড়া কাউকে চাকরীতে সুযোগ দেয়নি। যাদের চাকরি হয়েছে সবাই ৫ লক্ষ টাকা করে দিয়েছে। তাদের নামে এমপির ডিও লেটার গেছে। সব কিছু মিলন বড়ুয়াই করেছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশ ছাত্রলীগ এবং প্রভাবশালী নেতাদের কাছের মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিলন বড়ুয়ার এলাকার এক যুবক বলছে, আমিও পুলিশের চাকরিতে আবেদন করেছিলাম। চাকরি কনফার্ম করার জন্য মিলন দাদা আমার থেকে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। আমি টাকা দি নাই আর চাকরীর আশাও করিনি। এখন নিজের যোগ্যতায় লাখ টাকার চাকরি করছি এনজিওতে।

এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে অভিযুক্ত মিলন বড়ুয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার কোন প্রতিক্রিয়া মিলেনি।

পাঠকের মতামত

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...