উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫/১০/২০২৩ ৭:২১ এএম , আপডেট: ১৫/১০/২০২৩ ১০:৫৬ এএম

দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ঘষামাজার কাজ। আগামী ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেললাইন উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এর প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান। গত সোমবার পুরো রেললাইন বসানোর পর চকরিয়া থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ট্রলিতে করে প্রত্যক্ষ করেছি। আসার সময় যেসব ত্রুটি চোখে পড়েছে তা দ্রুত শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। ১৫ অক্টোবর রেল চলাচলের কথা থাকলেও কয়েকটি কারণে সেই সময় পেছানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ রেললাইন উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এর আগে কয়েকবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চালিয়ে আমরা দেখব কোথাও কোনো ত্রুটি আছে কিনা। পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। কক্সবাজারে নির্মাণাধীন আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের কাজ চলতি মাসেই পুরোপুরি শেষ হবে। স্টেশন ও সড়কের কাজ যেগুলো বাকি আছে সেগুলো কয়েক মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, যে ছয়টি বগি পটিয়ায় এনে রাখা হয়েছে সেগুলো দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল সম্ভব নয়। তা ছাড়া কালুরঘাট সেতু পুরোপুরি প্রস্তুত হতে ২০-২১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় লাগবে। ওই তারিখের আগেই নতুন বগি চলে আসবে। হয়তো ওই সময়ে পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু করা যাবে।

মফিজুর রহমান জানান, ১৫ অক্টোবর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রলিংযোগে পুরো রেলপথ পরিদর্শন করবেন। এসময় ১২ নভেম্বর উদ্বোধনসহ নানা বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত আসবে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ১২ নভেম্বর উদ্বোধন হলেও পর্যটকের জন্য বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলবে নভেম্বরের শেষের দিকে। কালুরঘাটসহ কয়েকটি সেতু দুর্বল হওয়ায় সেখানে গতি কমিয়ে ট্রেন চালানো হবে। বাকি পথে ১০০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন ছুটে চলবে। গত ১ আগস্ট থেকে কালুরঘাট ব্রিজের সংস্কার কাজ শুরু হয়। ৭ আগস্ট থেকে ব্রিজ দিয়ে ট্রেন এবং যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে ৬ আগস্ট ছয়টি নতুন বগি এবং একটি দুই হাজার ২০০ সিরিজের ইঞ্জিন আনা হয়। যেগুলো রাখা আছে পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের সামনে। কোরিয়া থেকে আনা এসব বগিতে ৬০ জন করে যাত্রী বসতে পারবেন।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের আওতায় ৩৯টি বড় সেতু, ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে। হাতি চলাচলের জন্য রয়েছে আন্ডারপাস। নির্মাণ করা হয়েছে ৯টি স্টেশন।

স্টেশনগুলো হলো- দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজার।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার। ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এতে অর্থায়ন করেছে এশিয়ান ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।

পাঠকের মতামত

হিমছড়ি সৈকতে স্নানে নেমে চবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, সাগরে নিখোঁজ ২ জন

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে এসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীর করুণ মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় ...