প্রকাশিত: ১২/০১/২০১৮ ৮:০০ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৮:১১ এএম
ফাইল ছবি

বিশেষ প্রতিবেদক::

ফাইল ছবি

উখিয়া উপজেলা সদরসহ আশেপাশের ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে ঘুরেফিরে সেই পুরোনো মুখগুলোই আলোচনায়। তবে বিপুল পরিমান রোহিঙ্গা অবস্থানের সুযোগে কিছু নতুন মুখও যোগ হয়েছে। ক্যাম্প ভিক্তিক তাদের বিচরণ চোখে পড়ার মতো। রোহিঙ্গাদের পুঁজি করে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শিবিরে অবস্থান করা মিয়ানমারেরর রোহিঙ্গা ইয়াবা গড়ফাদার দের সাথে বেড়েছে স্থানীয়দের তৎপরতা। অনেকে শুধু রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গুটিকয়েক পাচারকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর হাতে আটক হলেও বারবার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে গড়ফাদাররা। অথচ উখিয়া সদরে এসব গডফাদারের সংখ্যা হাতেগুনা । পাচারকারীদের হাতে ইয়াবা আটকের পর বিভিন্ন সময় গডফাদারের নাম উচ্চারিত হলেও এসব গডফাদাররা হয়তো কোন রাজনৈতিক নেতা,নয়তো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে ম্যানেজের মাধ্যমে পার পেয়ে গেছে। উখিয়ার চিস্থিত ইয়াবা গডফাদারের মধ্যে যাদের নাম সবচেয়ে বেশী উচ্চারিত হচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম হিজলিয়ার বাবুল ও মোস্তাক,দুছড়ির আতাউল্লা ,ফরেষ্ট অফিস সংলগ্ন এলাকার জালাল,কুতুপালং এলাকার জিয়াবুল হক,পালংখালীর রাশেল,গয়ালমারা সাইক্লোন সেন্টারের পাশে নতুন বাড়ী করা হোছেন, থাইনখালীর হাসেম,মানিক,কলিম উল্লাহ, ঘুমধুমের ইমাম হোসেন ও নুরু,ডিগিলিয়ার শাহাজাহান খলিবা,থাইনখালীর দাড়ি, জামাল,কানা মইন্না সহ প্রায় ২ ডজন ব্যাক্তি। যারা এলাকায় ইয়াবা গডফাদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এলাকার জনগনও তাদের চেনে মন্তবড় ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে। এদের প্রতিজনের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে শতাধিক যুবক। এসব যুবকরাই গডফাদারদের ইয়াবা পৌছে দিচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে। এদের সাথে সম্প্রীত যোগ হয়েছে রোহিঙ্গা পাচারকারীরা। মিয়ানমার থেকে চিস্থিত ইয়াবা গড়ফাদাররা এসে বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসেই ইয়াবা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে সুত্রে জানা গেছে। রোহিঙ্গা গডফাদারদের কাছ থেকে ইয়াবা নিয়ে শুধুমাত্র ২ ডজন ইয়াবা গড়ফাদার স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা বানিজ্য। কিছু ক্ষেত্রে এসব চিস্থিত ইয়াবা গডফাদাররা সম্পর্ক গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দূর্নীতিবাজ কিছু সদস্যের সাথে। কারো কারো সাথে মাসিক চুক্তি রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সাথে। তাই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবার কারবার চালিয়ে আসলেও এসব গড়ফাদাররা অধরাই থেকে গেছে। ইয়াবা বানিজ্যের মাধ্যমে উল্লেখিত গডফাদাররা নামে-বেনামে গড়ে তুলেছে অগাদ সম্পদ। বাড়ী গাড়ীসহ একাধিক দোকান দিয়েছেন কেউ কেউ। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর বখে যাওয়া কিছু সদস্য ম্যানেজ থাকায় এসব গড়ফাদাররা কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করে করছেনা। কক্সবাজারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইয়াবা বিরোধী বক্তব্যও তাদের ভীত নাড়াতে পারেনি।
উখিয়ায় মাদক ব্যবসার সাথে সংশি¬ষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,উখিয়া উপজেলার দরগাবিল,ডিগিলিয়া,ডেইলপাড়া,ধামনখালী,বালুখালী ঘাট,রহমতের বিল,আনজিমান পাড়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ পিচ ইয়াবার চালান অনায়াসে পাচার হয়ে এসে ক্যাম্পগুলোতে জমা হয়। পরে সুযোগ বুঝে তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যরা এসব ইয়াবা সড়ক পথে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সিন্ডিকেটের হাতে পৌঁছে দেয়। এছাড়াও পর্যটকবেশী কতিপয় পাচারকারী বিলাস বহুল গাড়ীতে করে দেশব্যাপী অভিনব কায়দায় ইয়াবা পাচার করে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন অনেক ক্ষেত্রে পর্যটক মনে করে এসব গাড়ীগুলো তল্লাসীর বাইরে রাখে। অল্প পুজিতে অধিক লাভের আশায় রোহিঙ্গা মহিলারা ক্ষুদ্র ইয়াবা সমুহ বর্ডিফিটিং সহ বিভিন্ন গোপনাঙ্গে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। অনেকে উপরে বোরকা পরিধান করে পাচার করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এসব মহিলারা পাচারকারীদের বাহন হিসাবে ও ব্যবহৃত হয় বলে জানা গেছে। উঠতি বয়সী যুবকরাও পিছিয়ে নেই ইয়াবা পাচারে। তাদের কাছে ইয়াবা যেন সোনার ডিম পারা হাস। অল্প সময়ে কোটিপতি হওয়ার নেশায় মেতেছে যুবকরা। তারা এক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছাউলাই মারমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর প্রশাসন ব্যাপকভাবে তৎপর রয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ধরতে। ছোট হউক বড় হউক কোন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবেনা।তবে উপরের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে প্রশাসন।

পাঠকের মতামত