
রাসেল চৌধুরী, কক্সবাজার ::
কক্সবাজারে আবারও বেড়েছে ইয়াবা কারবারীদের দৌরাত্ম্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ির কারণে কারবারিরা কিছুদিন গাঢাকা দিয়ে থাকলেও বর্তমানে কারবারিরা পুরোদমে নেমে পড়েছে ইয়াবা কারবারে। হঠাৎ ইয়াবায় সয়লাব হয়ে পড়েছে কক্সবাজার। গত একসপ্তাহে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫ লাখেরও বেশি ইয়াবা উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আবার কক্সবাজার শহরেই ঘটেছে এক কোটি ইয়াবা লুটের ঘটনা। লুণ্ঠিত ইয়াবা থেকেও দুই লাখ ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে ১০ জন। মামলা হয়েছে ৭টি।
গতকাল কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন মোড়ে অভিযান চালিয়ে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর। তাদের কাছ থেকে ৬ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সৈয়দ রোহিঙ্গা ও অপরজন টেকনাফের বাসিন্দা হাবিব। একই দিন উখিয়া কলেজ সংলগ্ন লম্বাঘোনা এলাকা থেকে ১০ হাজার ইয়াবাসহ হাফেজ আহম্মদের পুত্র আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১লা মার্চ দিবাগত রাতে রামু উপজেলার চা বাগান বৌদ্ধ মন্দির রোডের জনৈক ফজলুল হক চৌধুরীর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার ও সেখান থেকে আটককৃত ২ জন ইয়াবাকারবারীর স্বীকারোক্তি মতে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি করে আরো ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। আটককৃত ২ জন ইয়াবাকারবারীর একজন হলো রোহিঙ্গা। তার নাম নুরুল মোস্তফা, অপরজন কক্সবাজার শহরের কুতুবদিয়া পাড়ার সোনা মিয়া।এ বিষয়ে ডিবির ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার রামু থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ২রা মার্চ টেকনাফ থেকে ২ হাজার ৯২০ পিস ইয়াবাসহ এক চালককে আটক করেছে র্যাব-১৫। ওইদিন সন্ধ্যায় উপজেলার হোয়াইক্যং বাজার সংলগ্ন দক্ষিণে পাকা রাস্তা থেকে ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়। আটক মো. ইউনুছ (৩৩) উপজেলার নয়া পাড়ার আব্দুস শুক্কুরের ছেলে। ৩রা মার্চ রামু থেকে ১০ হাজার ইয়াবা ও নগদ ২৫ লাখ টাকাসহ সমিরা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ জয়নালের স্ত্রী। গত ৮ই ফেব্রুয়ারি বিকালে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর মাঝিরঘাটস্থ আবু ছৈয়দ কোমপানির জেটি দিয়ে কূলে তোলার সময় স্থানীয় টেকপাড়া এলাকার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে তার বাহিনী এক কোটি ইয়াবার একটি চালান লুট করে। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের কুলিয়াপাড়া এবং কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া থেকে ৩ জনকে আটক করা হয়। এরা হলো- কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের কুলিয়াপাড়ার মৃত ফজল মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ ফিরোজ (৩২), একই এলাকার মৃত সুলতান আহমদের ছেলে মো. মোস্তাক আহমদ ওরফে লালু (৩৬) এবং কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার মৃত আব্দুল করিম ওরফে ওসি করিমের ছেলে মোহাম্মদ ফয়সাল (৩০)। ফয়সাল কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সদস্য।
মানস বড়ুয়া বলেন, গত ৮ই ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর মাঝির ঘাট এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা ইয়াবা বড় একটি চালান সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের লোকজন কর্তৃক লুটের ঘটনা ঘটে। কক্সবাজার পুলিশের অতিরিক্ত সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, ইয়াবা কারবারিরা সবসময় সক্রিয়। একদিকে কড়াকড়ি হলে অন্যদিকে রোড তৈরি করে। এরা নতুন নতুন রোড তৈরি করে ইয়াবা কারবার চালায়। পুলিশও বসে থাকে না। আমরাও তাদের সব রোডে পৌঁছে যাই। পৌঁছে যায় বলেই এতো বড় বড় চালান উদ্ধার হয়, কারবারীরা আটক হয়। তিনি বলেন, ইয়াবা কারবারিদের ব্যাপারে সবসময় কঠোর অবস্থানে পুলিশ। কোন অবস্থাতেই ইয়াবা কারবারীদের ছাড় দেয়া হবে না। সুত্র : মানবজমিন
পাঠকের মতামত