প্রকাশিত: ২৬/০৬/২০১৬ ১০:০১ পিএম

jasimuddin_rahman20160626150525ইন্টারনেটে ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যক্তির কিছু ভিডিও সরিয়ে নেয়ার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

সংস্থাটি বলছে, জসিমউদ্দীন রাহমানী নামে একজন কারাবন্দি অভিযুক্ত জঙ্গি নেতাসহ তিনজন ব্যক্তির বক্তব্য বিভিন্নভাবে তরুণদের উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হতে আকৃষ্ট করছে। এমন তথ্য পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের এসব ভিডিও ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে ফেলতে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার বিভিন্ন ব্যক্তি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তারা জসিমউদ্দীন রাহমানীর বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশ বিটিআরসিকে চিঠি পাঠিয়ে বলেছে, রাহমানীর বক্তব্য সম্বলিত কিছু ভিডিও ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা নিতে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, তারা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি চুক্তির আওতায় এই অনুরোধ করেছেন। আর ইউটিউব থেকে কীভাবে সরানো যায়, সেই প্রক্রিয়া খুঁজছেন। তিনি বলেন, এর আগেও আমরা যখন ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ করেছি তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে মূলত ইন্টারনেটের নানা পাতায়, ফেসবুকে, ইউটিউবে রয়েছে রাহমানীর শত শত ভিডিও। এমনকি ফেসবুকে রাহমানীর কতগুলো ফ্যানপেজও রয়েছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. মাহমুদ আরো বলেন, জসিমউদ্দিন রাহমানী ছাড়াও আরো দু’জন ব্যক্তির বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও সরানোর জন্যও তাদের অনুরোধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদের একজন আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, অপরজন তারিক মনোয়ার। মনোয়ার সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি, তবে রাজ্জাক বিন ইউসুফ সম্পর্কে জানা গেছে তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক একজন ইসলামপন্থী নেতা, অধিকাংশ সময়েই তিনি দুবাইতে অবস্থান করেন বলেও দু’একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, তবে সেটা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।

অবশ্য ইন্টারনেটে এই দু’জনের নাম অনুসন্ধান করে তাদের বক্তব্য বা ওয়াজ সম্বলিত বহু ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. মাহমুদ বলছেন, সব ভিডিওই যে তারা সরানোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন তা নয়। শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট যেসব বক্তব্য সম্পর্কে অভিযোগ এসেছে, সেগুলো সরানোর ব্যবস্থাই তারা নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, ধর্মের ব্যাপারে বললে তো আমাদের আপত্তি করার কিছু ছিল না। কিন্তু ধর্মের ছদ্মবেশে যদি উস্কানিমূলক কথা বলে তখন তো বিষয়টিকে আর উপেক্ষা করা যায় না। তবে, ফেসবুক ও ইউটিউব ছাড়া অন্য যেসব ওয়েবসাইটে এসব ভিডিও রয়েছে সেগুলো সরানোর কোন কার্যকর ব্যবস্থা বিটিআরসির নেই বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

জঙ্গিবাদকে উসকে দেবার অভিযোগে জসিমউদ্দিন রাহমানীকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জঙ্গিবাদ নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তাদের কাছে এর আগে বিভিন্ন সময়ে শোনা গেছে রহমানীর নাম। এ রকম একজন গবেষক এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নুর খান লিটন বলছেন, জসিমউদ্দিন রাহমানী প্রতি শুক্রবার যে বয়ান দিতেন তাই ভিডিও করেই তার অনুসারীরা ইন্টারনেটে আপলোড করতেন। তার বক্তব্য সম্বলিত সিডিও বাজারে পাওয়া যায়।

জসিমউদ্দিন রাহমানী ছাড়াও আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ ও তারিক মনোয়ারের বক্তব্য বা ওয়াজেও জিহাদ উসকে দেয়ার মতো যথেষ্ট মাল-মশলার অস্তিত্ব পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করছেন নুর খান লিটন। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ইন্টারনেট থেকে এসব ভিডিও সরিয়ে দিয়ে খুব ভাল ফল পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি না।

বিটিআরসি অবশ্য বলছে, এদের সব ভিডিওই যে সরানো হচ্ছে তা নয়, সুনির্দিষ্টভাবে উগ্রবাদ ছড়ানোর উসকানি রয়েছে যেসব ভিডিওতে শুধু সেগুলোই তারা সরানোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

পাঠকের মতামত

‘সেন্টমার্টিন রক্ষায় মাস্টারপ্ল্যানের চিন্তাভাবনা চলছে’

সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরে আসতে শুরু করেছে। দ্বীপটি নিয়ে একটি মাস্টারপ্ল্যানের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। জানিয়েছেন, ...

তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মানে গণতন্ত্রের ঠিকানা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ...

হাসপাতালে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠকসহ ১০ জনকে পিটুনি

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকসহ অন্তত ১০ জনকে পিটিয়ে আহতের ...