প্রকাশিত: ০৫/১২/২০২১ ৯:৩১ এএম

বাংলাট্রিভিউন::
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনোবলে চিড় ধরাতে নৌকার প্রার্থীদের হারাতে ষড়যন্ত্র চলছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন মহল এতে যুক্ত বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। চলমান ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের পরাজয়ের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এমনটা মনে করছেন তারা।

সাধারণ নেতাকর্মীদের ধারণা, বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলেই নৌকার অনেক প্রার্থী হেরে যাচ্ছেন। তবে নীতি-নির্ধারকরা এর নেপথ্যে শুধু একটি কারণ আছে বলে মানতে নারাজ। তাদের দাবি, প্রতিপক্ষরা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মনোবলে চিড় ধরাতে নানা কূটকৌশলে নৌকার প্রার্থীকে হারাতে মাঠে নেমেছে।

ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা শনিবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত দশ বছরে আওয়ামী লীগের হারার নজির ‍খুব কম। নেতাকর্মীদের ভেতর এক ধরনের আত্মবিশ্বাস জন্ম নিয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাসকে দুর্বল করতেই প্রতিপক্ষ গ্রুপগুলো একাট্টা হয়েছে। তাই প্রথম ধাপের নির্বাচনে নৌকার জয়জয়কার থাকলেও দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে নৌকার হেরে যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, এটা দলের জন্য খারাপ নজির সৃষ্টি করছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো দাবি করছেন, দলের অভ্যন্তরে একটি বঞ্চিত গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে গত এক দশকে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ‘পকেট লীগ’ সৃষ্টি হয়েছে। আছে সুবিধাবাদী পক্ষও। বলয়ভিত্তিক রাজনীতির চর্চাও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। সুতরাং কেন্দ্র-ঘোষিত প্রার্থী পছন্দ না হলেই নৌকাকে হারাতে একজোট হয়ে যায় সবাই।

সূত্র জানায়, বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের অসন্তুষ্ট নেতাকর্মীদের উস্কে দিয়ে তাদেরকে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়ে দিচ্ছে। এতে বিদ্রোহী নির্মূলে কঠোর অবস্থান নিয়েও সুফল পাচ্ছে না আওয়ামী লীগ।

নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো আরও জানায়, ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে অল্প কিছু জায়গায় ভুল প্রার্থী মনোনয়ন পেয়ে যাচ্ছে—এটাও নৌকার পরাজয়ের একটি কারণ।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ওই নেতারা আরও বলেন, বিএনপি প্রকাশ্যে ইউপি নির্বাচন বর্জন করেছে ঠিকই, কিন্তু অরাজনৈতিক কিছু প্রার্থীকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে রাখছে। তাদের আর্থিক সহায়তাও দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় বিষয়গুলো চিহ্নিত করেছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে ওই দুই নেতা জানিয়েছেন, সাংগঠনিক সফরের মধ্য দিয়ে দলের অভ্যন্তরে তৈরি হওয়া অসন্তোষ দূর করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। তবেই সংগঠন শক্তশালী হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নৌকার প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। সাংগঠনিক সফরের মধ্য দিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ সংকটগুলো দূর করা হবে। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে নেই, কিন্তু ষড়যন্ত্র ঠিকই করছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য ফারুক খান বলেন, গত দশ বছরে নৌকা হারেনি নির্বাচনে। এখন আমাদের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনোবলে চিড় ধরাতে চায় কেউ কেউ। যেকোনও মূল্যে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে মাঠে নেমেছে ওরা। নিজেরা নির্বাচনে না থাকায় নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য যথেষ্ট সময় পাচ্ছে তারা। তিনি বলেন, আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মীকে হাতে নিয়েও নৌকা হারানোর মিশনে সফল হচ্ছে বিএনপি।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...