প্রকাশিত: ২৮/০৭/২০২০ ৮:৪১ পিএম

করোনাভাইরাসের কারণে এবছর সীমিত আকারে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ। হাজারো কণ্ঠে ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনির মাধ্যমে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার রাতেই। দীর্ঘ ৯০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সৌদি আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে হজে অংশগ্রহণ করতে পারছে না কেউ।

আগামী বৃহস্পতিবার পালিত হবে পবিত্র হজ। এ সময় হজ পালনকারীদের ইসলাম নির্দেশিত বেশকিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। মিকাতের আগে বা মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধার পর হজযাত্রীদের সর্বাবস্থায় বারবার ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ পাঠ করতে হয়।

নিবন্ধনকৃত ১০ হাজার হজযাত্রীর মধ্যে মাত্র এক হাজার হজযাত্রীর পদচারণায় মিনার মাঠে আজ রাতে শুরু হচ্ছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। সন্ধ্যায় তারা পবিত্র মক্কা নগরী থেকে পাড়ি জমাবেন মিনার দিকে। মিনার খিমায় (তাঁবু) তাদের সবাইকে একত্রে রাত কাটাতে হবে।

প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩০ লাখ হাজির উপস্থিতিতে হজ পালন হলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পবিত্র হজ। এর আগে সৌদি আরব জানিয়েছিল, তারা দশ হাজার হাজিকে হজের সুযোগ করে দিবে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে এবার আর ১০ হাজার নয়, এক হাজার হাজি অংশ নিচ্ছেন পবিত্র হজ পালনে।

করোনা মহামারির কারণে এ বছর সীমিত পরিসরে হজ পালনের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি জারি করেছে সৌদি আরবের জাতীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

পবিত্র হজের জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত মক্কা। করোনার কারণে এবার ব্যতিক্রমী সব পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবার হজের অনুমতি পাচ্ছে এক হাজারেরও কম সংখ্যক হজযাত্রী। তারা সবাই সৌদি আরবের নাগরিক, না হয় সৌদি আরবে অবস্থানরত বিদেশি।

এসব হজযাত্রীকে উত্তম সেবা দেওয়ার জন্য এ বছর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কমপক্ষে ১৮ হাজার ৪৯০ জন কর্মী। হজের পবিত্র স্থানগুলোসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২৮টি নতুন ও পূর্ণাঙ্গ সরঞ্জামে সুসজ্জিত সার্ভিস সেন্টার বসানো হয়েছে। এসব স্থানে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে কমপক্ষে ১৩ হাজার ৫০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী। পবিত্র মিনায় স্থাপন করা হয়েছে ৮৭ হাজার ৯০০ আন্ডারগ্রাউন্ড আবর্জনার কন্টেইনার।

মার্কেট, খাবার দোকান ও রেস্তোরাঁয় নজরদারি করতে কাজ করবে বেশ কিছু টিম ও কমিটি। তারা নজর রাখবেন মুদি দোকান, রেস্তোরাঁ, ক্যাফেটেরিয়া, সেলুন, লন্ড্রি, বেকারি ও অন্যান্য সেবাখাতে। তারা নিয়মিত খাবারের মান পরীক্ষা করবে এবং নষ্ট জিনিসপত্র ধ্বংস করে ফেলবে, দাম দেখাশোনা করবে, পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা দেখাশোনা করবে। পশুদের মধ্যে কোনো জীবাণু আছে কি না, তা নির্ধারণে কাজ করবে তারা।

এ ছাড়া মক্কা মিউনিসিপ্যালিটি বিদ্যুত, সড়ক যোগাযোগ, টানেল, ব্রিজ, টয়লেট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা দেখাশোনা করবে। অগ্নিকাণ্ড অথবা ভারি বর্ষণে করণীয় নির্ধারণ করবে তাদের জরুরি ইউনিট।

উল্লেখ্য, এবারের হজে হাজিদের সব খরচ দিচ্ছে সৌদি সরকার। হজের দ্বিতীয় দিন আরাফাতের ময়দানের খুতবা বাংলাসহ ১০টি ভাষায় অনূদিত হবে।

পাঠকের মতামত