প্রকাশিত: ৩০/০১/২০১৭ ১০:২৬ এএম , আপডেট: ৩০/০১/২০১৭ ১০:২৮ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা চিহ্নিত করতে ১১ সদস্য বিশিষ্ট বিভাগীয় কমিটি গঠন করেছে সরকার। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়েছে, জেলা প্রশাসকে সভাপতি করে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলায় ১১ সদস্যের একটি করে আরও তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ওই জেলাগুলোর সংশ্লিষ্ট উপজেলা, পৌরসভা ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সীমিত আকারে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি করে গঠিত ১১ সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার, বিজিবি রিজিওয়ান কমান্ডার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, ডিজিএফআইয়ের বিভাগীয় প্রধান, কোস্ট গার্ডের জোনাল কমান্ডার এবং কক্সবাজার, চট্টগ্রাম বান্দরবান ও নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, আনসার ও ভিডিপির পরিচালক এবং আঞ্চলিক বন সংরক্ষককে সদস্য করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে (সার্বিক)।

জেলা পর্যায়ের কমিটিতে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, বিজিবির সেক্টর কামান্ডারে প্রতিনিধি/কমান্ডিং অফিসার, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কর্নেল জিএস, এনএসআইয়ের যুগ্ম/উপপরিচালক, আনসার ভিডিপির জেলা কমাড্যান্ট, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, কোস্ট গার্ডের স্টেশন কমান্ডার এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে।  কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (সার্বিক)।

বিভাগীয় কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে প্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগরিকদের চিহ্নিত করে জেলা কমিটিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেবে, জেলা কমিটির কার্যপরিধিভুক্ত যেকোনও বিষয় আলোচনা করবে, কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দফতরে পাঠাবে, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সরকারের নিকট সুপারিশ পেশ করবে এবং বিশেষ প্রয়োজন ও অবস্থা অনুযায়ী সভা আহ্বান করবে।
কমিটি গঠন সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু এলাকায় সম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে মিয়ানমারের প্রায় ৬৫ হাজার রাখাইন মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত নাগরিক বিধিবহির্ভূতভাবে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ-উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।
মিয়ানমারের ওই নাগরিকরা কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষত টেকনাফ এবং উখিয়ার নয়াপাড়া, লেদা ও কুতুপালং-এর নিবন্ধিত ক্যাম্পে শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছে। এর মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক শরণার্থী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলাদেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এছাড়া ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারের অগণিত নাগরিক অবৈধভাবে প্রবেশ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে মর্মে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষাপটে গত ৫ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে থেকে ‘অবৈধ অনুপ্রেবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ’ নামে চট্টগ্রাম ভিাগীয় কমিশারেন নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি করে কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কমিটি সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা চিহ্নিত করতে জেলা কমিটিতে আলোচনা করে কমিটি গঠন করতে হবে। জেলা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা ও উপজেলা কমিটির চেয়ারম্যান উপদেষ্টা থাকবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা কমিটির সভাপতি, মেয়র সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কমিটির সভাপতি, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কমিশনার ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি থাকবেন।
কমিটি গঠন সংক্রান্ত্র আদেশের নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগকে যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা হয়। এতে সীমান্ত পুলিশের ১২ সদস্য নিহত হয়। এই হামলার জন্য রোহিঙ্গা মুসলমানদের দায়ী করে তাদের ওপর নির্যাতন চালায় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের নির্যাতনে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...

খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর :: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ...