প্রকাশিত: ০৯/০১/২০১৭ ৭:৩৭ এএম , আপডেট: ০৯/০১/২০১৭ ৮:০২ এএম
চলছে ঝুপড়ি নির্মাণ
চলছে ঝুপড়ি নির্মাণ

রফিকুল ইসলাম, উখিয়া
উখিয়ার কুতুপালংয়ে গত বৃহস্পতিবার বনকর্মকর্তাদের উপর হামলার ঘটনায় ইন্ধনদাতার ব্যাপারটি এখন সর্বত্রই আলোচিত হচ্ছে। ঐ সময় কারা রোহিঙ্গাদের উস্কে দিয়েছিল, কেনইবা উস্কে দিয়েছিল, কারা গুলি চালিয়েছিল, কী স্বার্থে তারা এসব কাজ করেছে- এসব বিষয় এখন সবার মুখে মুখে।

সচেতন মহলের প্রশ্ন- উখিয়ার কুতুপালংএ রিজার্ভ বনভূমি দখল করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের জন্য ভাড়ায় ঝুপড়ি নির্মাণকারী এসব সুবিধাভোগী কারা? অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী কর্তব্যরত বনকর্মীদের উপর হামলা, গুলিবর্ষণের নেপথ্যে কারা ছিল? শত শত রোহিঙ্গাদের বনকর্মীদের উপর হামলার জন্য লেলিয়ে দিয়েছিল কারা? তারা বলেন, এসব বিষয়ের যদি সঠিক তদন্ত করা হয় তাহলে ঐদিনের ঘটনার হোতাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

ঐদিন অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া উখিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, পঙ্গপালের মত যেভাবে শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ লাঠি-সোটা, দা-খুন্তি নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসছিল তা খুবই ভয়াবহ ছিল। ভাগ্যিস আমরা ২০/২৫ জন পিছু হটে ফাঁকা গুলি করে জঙ্গলের দিকে সরে আসি। পরে বালুখালীর ছড়া ধরে ঘণ্টাখানেক হেঁটে কাস্টমস স্টেশনে গিয়ে আশ্রয় নিই। তিনি বলেন, আমরা বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম রোহিঙ্গা বস্তি থেকে ৭/৮ রাউন্ড গুলি বর্ষণের শব্দে। এ ঘটনায় ৪ জন বন কর্মকর্তা ২ জন গার্ড ও ৩ জন হেডম্যান-ভিলেজার আহত হয়েছিলেন।

রোহিঙ্গাদের গুলতির আঘাতে আহত উখিয়া সদর বনবিট কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মান্নান ও দৌছরি বনবিট কর্মকর্তা আবুল হোসেন গজনবী বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে ও কর্তব্য পালনে গিয়ে বিদেশী অনুপ্রবেশকারীদের হাতে আক্রান্ত হওয়া খুবই দুঃখজনক। জনৈক এনজিও কর্মী বস্তির পার্শ্ববর্তী এলকার স্থানীয় কিছু বন দখলকারী ও রোহিঙ্গা নেতাদের উস্কানি দিয়ে কর্তব্যরত বনকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে বলে দাবি কর্মকর্তাদের।

তারা জানান, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী বনভূমি জবর দখল করে রোহিঙ্গাদের জন্য ঝুপড়ি তৈরি করে সেখান থেকে বেআইনীভাবে ভাড়া আদায় করছে। আর এসব কাজে তাদের সাথে চিহ্নিত স্থানীয় কিছু রোহিঙ্গা দালাল ও এনজিও কর্মীর জোগসাজস রয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, ঐদিন বনকর্মীরা পিছু হটে না আসলে হয়তো তাদের আর জীবিত ফেরত আসা সম্ভব হতো না।

জানা গেছে, ঐ এনজিও কর্মী বেআইনিভাবে বিভিন্ন দেশী-বিদেশী ব্যক্তি ও সংগঠন অর্থায়নে সরকারী রিজার্ভ বনভূমি অবৈধ দখল করে সেখানে ঝুপড়ি নির্মাণে সহযোগিতা করছে। বন কর্মকর্তাদের মতে, গত বৃহস্পতিবারের পর স্থানীয় বনকর্মীরা একপ্রকার অসহায়। এ সুযোগে জবর দখলকারী দালাল চক্র কতিপয় এনজিও ও তাদের কর্মীদের ইন্ধনে আরো ব্যাপক হারে সরকারী রিজার্ভ বনভূমি জবর দখল করে ঝুপড়ি নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে।

তারা এখন আর কুতুপালংয়ে সীমাবদ্ধ নেই, ওই সব দালালরা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় উখিয়ার ঘাট বনাঞ্চলের বালুখালী রিজার্ভ বনভূমি জবর দখল করে নতুন বস্তি স্থাপনা গড়ে তুলছে বলে জানান উখিয়ার ঘাট বনবিট কর্মকর্তা মোঃ মুবারক আলী। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় উখিয়া সদর বনবিট কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে উখিয়া থানায় সরকারী কাজে বাধা প্রদানকারী ও বন জবর দখলকারী দুর্বৃৃত্তদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা উখিয়া থানার এসআই পার্থ প্রতিম দেব বলেন, মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে ও আসামিদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা চলছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংর ক সারওয়ার আলম বলেন, ইতোমধ্যে রিজার্ভ বনভূমিতে গড়ে উঠা রোহিঙ্গা বস্তি ও সৃজিত বনায়ন পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শন প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সুত্র::আজাদী

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...

খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর :: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ...