প্রকাশিত: ১৮/১১/২০১৬ ১১:৫১ এএম

অনলাইন ডেস্ক : মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন ও নির্বিচারে হত্যা হলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় দেশটির নেত্রী অং সান সু চি’র নোবেল পুরস্কার বাতিল অথবা ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে গণ পিটিশন শুরু করেছে চেঞ্জ ওআরজি (change.org) নামে ইন্দোনেশিয়ার একটি সংগঠন।

সূ চিকে বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে সংগঠনটির কর্মীরা একটি অনলাইন পিটিশনে সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায় করছেন। এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত এই আবেদনে সমর্থন জানিয়েছেন ৯২ হাজার ২০৫ জন। মোট দেড় লাখ সই হলেই তারা এটি নোবেল কমিটি-২০১৬’র চেয়ারম্যান কাচি কুলমান ফিভের কাছে হস্তান্তর করবেন।

বেশ কিছুদিন ধরে দমন অভিযানে দেশটির সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে বহু রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার দেশটির রাখাইন রাজ্যে আবারো দমন অভিযান শুরু হয়। এতে শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হয় বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। এ ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ জানান জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। মিয়ানমারের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে কফি আনানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিশন রাখাইন রাজ্যে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় শত শত রোহিঙ্গা। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি নৌকা ফিরিয়ে দেয়া হলে সেগুলো এখন সমুদ্রে ভেসে আছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

বার্মায় গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় ১৯৯১ সালে অং সান সূ চিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে নোবেল কমিটি। কিন্তু মিয়ানমার থেকে বের হলে সামরিক জান্তা তাকে দেশে ফিরতে দেবে না এমন আশঙ্কায় তখন তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করতে যাননি। অবশেষে ২১ বছর পর ২০১২ সালের ১৬ জুন নরওয়ের রাজধানী অসলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হলেও রোহিঙ্গা নিধনের বিষয়ে ভূমিকা না নেয়ায় সু চির নোবেল পুরস্কার বাতিলের দাবি জানান ওআরজি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করার অভিযোগ করে সংগঠনটি।

মূলত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে সোচ্চার হয়েছে সংগঠনটি। এছাড়া ২০১৩ সালে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সু চির এক মন্তব্যকে সামনে আনছেন তারা।

বিবিসি টুডে’র এক উপস্থাপককে উদ্দেশ্যে করে সু চি বলেছিলেন, ‘একজন মুসলমানকে সাক্ষাৎকার দিতে হবে, সেটা আগে থেকে আমাকে কেউ জানায়নি।’ ওই দিন মিসাল হুসেইন নামে এক মুসলিম উপস্থাপকের সু চির সাক্ষাৎকার নেয়ার কথা ছিল।

অন্দোলনের ডাক দেয়া কর্মীরা বলছেন, ‘একজন নোবেল পুরস্কার জয়ী ব্যক্তির কাছ থেকে কোনোভাবে এই ধরনের সাম্প্রদায়িক বক্তব্য আশা করা যায় না। শুধু বক্তব্য দিয়েই নয়, তিনি তার দেশে মুসলিম রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও অমানবিক আচরণ করছেন। সূ চিকে বলতে হবে মুসলিম হওয়াই কী তাদের অপরাধ?’

পিটিশনের লিংক: https://www.change.org/p/take-back-aung-san-suu-kyi-s-nobel-peace-prize

পাঠকের মতামত

বৈশ্বিক অনুদান কমায় রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে শিশু শিক্ষার পরিস্থিতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান ...

যে কারনে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ট্রাম্প

এবার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। পাবলিকান আইনপ্রণেতা ...

ট্রাম্পের অনুরোধে ইরানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করিয়েছে কাতার

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তেহরানকে রাজি করাতে মধ্যস্থতা করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ...