রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন মিয়ানমার সফরকালে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি ও সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সু চি ও মিনের মধ্যে দূরত্বই প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
সু চি টিলারসনকে মুক্তমনা বলে প্রশংসা করেছেন। আর মিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, তিনি মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিকের কাছে রাখাইনের ‘প্রকৃত পরিস্থিতি’ ব্যাখ্যা করেছেন।
বৈঠক শেষে টিলারসন, ব্যাপকভিত্তিক নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে অনীহা জানালেও এ কথা স্পষ্ট করে দেন যে, রোহিঙ্গা নিপীড়নে দায়ী সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তার দেশ নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে।
টিলারসন বলেন, ‘আমাদের কাছে যদি বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে কিছু ব্যক্তি কিছু কাজের জন্য দায়ী তাহলে কিছু ব্যক্তির ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা উপযুক্ত পদক্ষেপ হতে পারে।’
ব্যাংকক থেকে প্রকাশিত ইরাবতী নামে একটি অনলাইন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, জেনারেল মিন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সরকারকে সহযোগিতা করবে টাটমাডো (স্থানীয় ভাষায় সেনাবাহিনী)। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, সু চি ও শীর্ষ জেনারেলদের মধ্যে গভীর দূরত্ব ও সংশয় রয়েছে এবং ক্রমেই তা বাড়ছে। অনেক জেনারেল মনে করেন সু চি জেনারেলদের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা চান। তারা সু চিকে ‘নাশকতার চর’ বলে মনে করেন।
পত্রিকাটি জানায়, রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সু চিকে দায়ী করলেও তিনি রাখাইনে জরুরি অবস্থা তথা সামরিক শাসন জারি ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাটি সেনা নিয়ন্ত্রণে রাখার বিরোধী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক পর্যবেক্ষক শঙ্কিত যে, সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে সু চির সম্পর্কে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। জেনারেলরা সন্দেহ করছেন যে সু চি সুনির্দিষ্টভাবে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল চান। ফলে সু চিকে এখন দড়ির ওপর হাঁটতে হচ্ছে। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীই সবচেয়ে ক্ষমতাধর। সু চির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভঙ্গুর থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত