প্রকাশিত: ১৩/০৬/২০১৭ ৩:২২ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:৩৭ পিএম

নিউজ ডেস্ক::
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি সুইডেন সফরকালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েছেন। দ্বিপক্ষীয় আমন্ত্রণমূলক এ সফরে সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্তেফান লোফভেনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হওয়ার পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন তিনি। এ সময় তাকে খানিকটা রাগান্বিত হতেও দেখা গেছে।

প্রায় ২০ মিনিটের এ সংবাদ সম্মেলনে একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয় তার দিকে। সবগুলো প্রশ্নই ছিল রাখাইন বা রোহিঙ্গা সম্পর্কিত। বাধ্য হয়ে ১০টির মতো প্রশ্নের জবাব দেন সুচি। এসময় তার চেহারায় ছিল কিছুটা রাগীভাব। যৌথ সংবাদ সম্মেলন হলেও সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীকে কোন প্রশ্নই করেননি সাংবাদিকরা।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনের উদ্বোধনী মন্তব্যে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্তেফান বলেন, দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় তিনি সুচির কাছে রাখাইন পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। এ সময় সুইডেনের অবস্থান সুস্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি সেখানকার (মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট) মূল কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করা এবং আন্তঃধর্মীয় বিদ্বেষ এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকাটা জরুরি।’

এ বক্তব্যে মানবাধিকার পরিস্থিতি লঙ্ঘনের জন্য যারা দায়ী তাদের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী জানান।

এরপর সুচি মিয়ানমারের জটিল সমাজ ব্যবস্থা এবং প্রায় ১৩০টি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদের একটি চিত্র তুলে বলেন, মিয়ানমারের বেশিরভাগ মানুষ শান্তি চায়।

এরপর প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকরা মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের কাছে দেশটি কেন জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে প্রত্যাখান করছে, তার শান্তিতে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পরও কেন রোহিঙ্গা বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেননি, রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্প বন্ধ করবেন কিনা, রাখাইনে শান্তি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা কতটুকু কঠিন ইত্যাদি প্রশ্ন করেন।

এ সময় আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা কঠিন স্বরে সুচি প্রশ্নগুলোর উত্তর দেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে প্রথমে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পে দুষ্কৃতকারীদের হামলার ঘটনা ঘটে। এরপরে সেখানে জাতিগত দাঙ্গা থামানোর নামে মুসলমান অধ্যুষিত রোহিঙ্গা এলাকায় দেশটির সামরিক বাহিনী উপর্যুপরি হামলা ও নির্যাতন চালায়। এ হামলায় শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয় এবং ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুইডেনে তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরের আগ মুহুর্তে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এ আলোচনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে কূটনীতিক মহল।

প্রসঙ্গত: সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেনের আমন্ত্রণে সুইডেন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বাংলাদেশের কোনও সরকার প্রধানের দেশটিতে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। এ কারণে আজ মঙ্গলবার লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ২৪ ঘণ্টার যাত্রা বিরতি শেষে আগামী ১৪ জুন সুইডেনে পৌঁছার কথা রয়েছে তার। তিন দিনের সফর শেষে আগামী ১৭ জুন লন্ডন হয়ে তিনি দেশে ফিরে আসবেন।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে বেসামরিক হত্যা-গ্রেপ্তার বাড়িয়েছে জান্তা : জাতিসংঘ

বিরোধীদের নিষ্ক্রিয় করতে সম্প্রতি মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনদের হত্যা ও গ্রেপ্তারের হার বৃদ্ধি করেছে ক্ষমতাসীন সামরিক ...

বন্যা মোকাবিলায় বিদেশে সহায়তা চাইলেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় বিদেশি সহায়তার জন্য বিরল আবেদন করেছেন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল ...