এম.বশিরুল আলম,লামাঃ
মাতামুহুরী নদীর ভাঙনে লামা উপজেলার লামা পৌরসভাসহ রুপসী পাড়া ও লামা সদর ইউনিয়নের শত শত ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনে হুমকীর মুখে রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মানাধীন দু’টি বৃহাদাকারের ব্রীজ। এ বর্ষা মৌসুমে ভাঙন আরো তীব্র আকার ধারন করেছে। ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রীরা বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিলেও সে সকল আশ্বাসের সুফল পায়নি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী।
সরজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে-মাতামুহুরী নদীর ভাঙনে ইতিমধ্যে উপজেলার লামা পৌরসভা, লামা সদর ইউনিয়ন এবং রুপসী পাড়া ইউনিয়নের শত শত ঘরবাড়ি, চলাচলের রাস্তা, ফসলী জমি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার অংহ্লা পাড়া বাজার, বাজার সংলগ্ন দরদরী জামে মসজিদ এবং ওই এলাকার শত শত বসতবাড়িসহ স্থাপনা বর্তমানে হুমকীর মুখে রয়েছে । এছাড়া লামা পৌর এলাকার কুড়ালিয়ারটেক , লামামুখ বাজার , সাবেক বিলছড়ি , লাইনঝিরি-সাবেক বিলছড়ি সড়ক , চাম্পাতলী আর্মি ক্যাম্প , টি.টি এন্ড ডি,সি , হাসপাতাল পাড়া , স’মিল পাড়া , লামা বাজার, লামা বাজার পাড়া , বাজার ঘাট সংলগ্ন ফরেষ্ট অফিস, শীলেরতুয়া মার্মা পাড়া , সাবেক বিলছড়ি মার্মা পাড়া , লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা, মেউলারচর, বইল্লার চর ও রপসী পাড়া ইউনিয়নের শীলেরতুয়া.দরদরিসহ এলাকার বহু সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, ফসলী জমি, ঘরবাড়ী মাতামুহুরী নদীর দু’কূলের অব্যাহত ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অপরদিকে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারন করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মানাধীন লামা –সুয়ালক সড়কের “ মাতামুহুরী ব্রীজ” এবং লামা- রুপসী পাড়া সড়কের “অংহ্লাপাড়া ব্রীজ” দুটি বর্তমানে ঝুকের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া বগাইছড়ি খালের ভাঙনে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক ও আবাদী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
নদী ভাঙনে তার ইউনিয়নের অংহ্লাপাড়া এবং শিলেরতুয়া এলাকার ব্যাপক জনবসতি ও ফসলী জমি এবং রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনে ঝুকিপূর্ণ হয়ে চাম্পাতলীর উপড়দিয়ে বয়ে যাওয়া মাতামুহুরী ব্রীজ ও অংহ্লা পাড়া ব্রীজ।
লামা পেীর মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, তার পেীরসভার বিস্তৃর্ণ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমেও ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে। নদী ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙন রোধ কল্পে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রীরা বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন ঘটেনি। ১৯৯৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বান্দরবান সফরে আসলে মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গন রোধে কাজ করার জন্য ৬ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করেন কিন্তু উক্ত বরাদ্ধেরও কোন হদীস মিলেনি। সব শেষে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি মাতামুহুরী নদীর ভাঙন কবলিত অংহ্লাপাড়া এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি পানি সম্পদ মন্ত্রীর সাথে পরামর্শক্রমে নদী ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন। ভূক্তভোগীরা আরো জানিয়েছেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙন রোধ করার জন্য ১৯৯৩ সালে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তৎকালিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হলে প্রধান মন্ত্রীর স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগ থেকে সচিব পানি সম্পদ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। অদ্যাবদি এ নির্দেশের কোন সুফল এলাকাবাসী পায়নি।
এ নদীর অব্যাহত ভাঙনের ক্ষয়-ক্ষতির কবল থেকে রক্ষার জন্য ক্ষতিগ্রস্থরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন মহলের হস্থক্ষেপ কামনা করছেন। ##
পাঠকের মতামত