প্রকাশিত: ০৫/১২/২০১৬ ৭:৫৮ এএম

e5ccf83e34e589357d630dc4ee99532d-22আব্দুল কুদ্দুস, কক্সবাজার ::

পিঠে ৭ ইঞ্চি লম্বা অ্যানটেনা বসানো হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ১৪০ গ্রাম ওজনের একটি স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার। এই যন্ত্র নিয়ে ‘লাবণি’ ঘুরবে সাগরে। তার কাজ হবে সাগরে বিচরণ করা কচ্ছপের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা। সামুদ্রিক কচ্ছপের পরিযায়নের সম্পর্কেও ধারণা দেবে লাবণি। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় স্যাটেলাইট অ্যানটেনাযুক্ত লাবণি কচ্ছপটিকে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করা গবেষণা সংস্থা ‘মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্স’-এর উদ্যোগে কচ্ছপে স্যাটেলাইট অ্যানটেনা যুক্ত করা হয়েছে।
কক্সবাজার সৈকতের লাবণি পয়েন্ট দিয়ে কচ্ছপটি সাগরে অবমুক্ত করার কারণে এর নাম দেওয়া হয় লাবণি। এটি একটি ‘গ্রিন টার্টল’ (সবুজ সামুদ্রিক কাছিম)। এর ওজন ১০ কেজি। লম্বা ৪৬ সেন্টিমিটার। বয়স পাঁচ থেকে ছয় বছর হতে পারে।
কচ্ছপটি অবমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন মেরিন লাইফের প্রধান নির্বাহী জীববিজ্ঞানী মো. জহিরুল ইসলাম, কক্সবাজার (দক্ষিণ) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আলী কবির প্রমুখ।
জহিরুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে গভীর সাগর থেকে গ্রিন টার্টলটি মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের দিকে আসছিল। দ্বীপের পশ্চিম ও পূর্ব সীমান্তে পুঁতে রাখা টানা জালে আটকা পড়ে কচ্ছপটি। এরপর জেলেরা কচ্ছপটি উদ্ধার করে মেরিন লাইফের কাছে নিয়ে আসেন। গতকাল বিকেলে কচ্ছপটির পিঠে স্যাটেলাইট যন্ত্র স্থাপন করা হয়। সন্ধ্যায় সৈকতের লাবণি পয়েন্ট দিয়ে কচ্ছপটি সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়। ।
জীববিজ্ঞানী জহিরুল ইসলাম বলেন, এর আগেও (গত তিন বছরে) মেরিন লাইফের উদ্যোগে ২১টি সামুদ্রিক কচ্ছপের পিঠে স্যাটেলাইট যন্ত্র স্থাপন করে বঙ্গোপসাগরে ছাড়া হয়েছিল। এর ফলে সাগরে কচ্ছপের বিচরণ, গতিবিধি ও পরিযায়ন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। কচ্ছপটি যখন নিশ্বাস নেওয়ার জন্য পানির ওপর ভেসে উঠবে, তখন অ্যানটেনাটি সংকেত পাঠাবে। সেখান থেকে তথ্য বিশ্লেষণের পর কচ্ছপটির সঠিক অবস্থান জানা যাবে।
মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্সের গবেষকেরা বলেন, গ্রিন টার্টল কচ্ছপ লম্বায় ১৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর ওজন ২৫০ কেজি পর্যন্ত হয়। বাঁচে ৮০ থেকে ৯০ বছর। পৃথিবীতে এরা বিপন্ন প্রায় প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, শাহপরীর দ্বীপ, মহেশখালী, সোনাদিয়া, ধলঘাটা উপকূলে কিছু গ্রিন টার্টল ডিম পাড়তে আসে।
মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্সের সংস্থার গবেষণা সহকারী আবদুস সালাম তালুকদার বলেন, শীত মৌসুমে ডিম পাড়ার জন্য হাজার হাজার মা-কচ্ছপ কক্সবাজার উপকূলের দিকে ছুটে আসে। উপকূলে পুঁতে রাখা মাছ ধরার জালে আটকা পড়ে শত শত কচ্ছপের মৃত্যু হয়। জালে আটকা পড়লে কচ্ছপকে হত্যা করেন অনেক জেলে। এ জন্য জেলেদের সচেতন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি মেরিন লাইফের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

পল্লীবিদ্যুৎকে দায়ী করছে বনবিভাগবৈদ্যুতিক ফাঁদে উখিয়ায় বন্যহাতি নিধন

কক্সবাজারের উখিয়ায় আবারো বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার রাজাপালং ...

টেকনাফে বাজার সমুহে যানজটমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান জোরদারের দাবী

টেকনাফের বিভিন্ন বাজার সমূহে প্রতিনিয়ত যানজটে জনজীবন অতীষ্ট হয়ে পড়েছে সর্বস্তরের মানুষ। যানজটের জন্য ব্যবসায়ীসহ ...

সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেন উখিয়ার ডাঃ এ.এইচ. সুমন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সদ্য প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো-পেডিক) ডাঃ ...

উপকূলের ম্যানগ্রোভে বিশ্বস্বীকৃতি—দ্য আর্থশট প্রাইজ জিতলো ফ্রেন্ডশিপ

বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ পুরস্কার ‘দি আর্থশট প্রাইজ ২০২৫’ জিতেছে বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। ...