মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধ না হলে রোহিঙ্গা সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান সম্ভব নয়।মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ঢাকায় নিযুক্ত নরডিকভুক্ত সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতেরা এমন মন্তব্য করেছেন।এর আগে তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী ও মিয়ানমার থেকে নতুন করে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে জানতে তিন দিন কক্সবাজারে ছিলেন।
সুইডেন দূতাবাসের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশাপাশি মিয়ানমারের অনিবন্ধিত নাগরিকদের মানবিক সমস্যা সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত ইয়োহান ফ্রিসেল, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিসেল ব্লিকেন ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মাইকেল উইন্টার ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি কক্সবাজার সফর করেন।
এ সময় টেকনাফের লেদা ও উখিয়ার কুতুপালংয়ে মিয়ানমারের অনিবন্ধিত নাগরিকদের অস্থায়ী শিবির এবং নয়াপাড়ার শরণার্থীশিবির ঘুরে ব্যবস্থাপনা কমিটি ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা কথা বলেন।
নরডিক তিন রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা প্রতিনিধি ছাড়াও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, বিজিবি এবং আরআরআরসি দফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন।
সুইডেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘নতুন আসা রোহিঙ্গারা জটিল মানবিক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রয়াস তাদের প্রয়োজন মেটাবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধ না হলে রোহিঙ্গা নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান সম্ভব হবে না, সেটি স্পষ্ট।’
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মিয়ানমারে গণহত্যা ও সহিংসতা থেকে বাঁচতে সম্প্রতি ৬৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে আসার পর বাংলাদেশ সরকার ও মানবিক সংগঠনগুলো যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে, তাতে আমি মুগ্ধ। এরা অস্থায়ী শিবিরগুলোতে পরিবার কিংবা স্বজনদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার সফর শেষে এটি আমার কাছে স্পষ্ট যে, এসব রোহিঙ্গা যত শিগগির সম্ভব রাখাইনে ফিরে গিয়ে তাদের বাড়িঘর তৈরি করে আবার জীবিকা শুরু করতে আগ্রহী।’
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের জন্য চাপ তৈরি করছে। এটি স্থানীয় লোকজন ও বাংলাদেশের নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলছে।
বিবৃতিতে রাষ্ট্রদূতেরা সেখানকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রয়াসের প্রশংসা করেন।
একই সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় নরডিক দেশগুলোর পদক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরেন।
পাঠকের মতামত