প্রকাশিত: ২০/০৯/২০১৭ ৪:২২ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:১৫ পিএম

নিউজ ডেস্ক:;
উখিয়ার কুতুপালং টিভি টাওয়ার থেকে ২০ গজ ভেতরে প্রবেশ করতেই একটি ঝুপড়ি ঘরে কিছু লোকের জটলা দেখা গেলো। প্রশ্ন করার আগেই একজন এগিয়ে এসে বলেন, ঘণ্টা তিনেক আগে এখানে একজন রোহিঙ্গা মা বাচ্চা প্রসব করেছে খোলা আকাশের নিচে। আশপাশে থাকা কিছু মহিলা ঘিরে রেখেই বৃষ্টির মধ্যেই প্রসববেদনা নারীকে সাহায্য করেন।

এটি তার সপ্তম সন্তান। এছাড়াও তার ৪ মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। গুলবাহার নামের এই নারী ১৫ দিন আগে মুণ্ডু এলাকা থেকে প্রসববেদনা অবস্থায় দুর্গমপথ পাড়ি দিয়ে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান পাশে থাকা অন্য রোহিঙ্গা সদস্যরা। এরই মধ্যে একজন নারী পৃথিবীতে আসা নব্য অতিথিকে ছবি তুলতে নিয়ে আনলেন। পুত্রশিশুটিকে তখনো চোখ ফুটতে দেখা যায়নি।

একই ক্যাম্পে ৭টি ঝুপড়ি ঘরে খোঁজ নিলে আরো ৫ জন গর্ভবতী আছেন বলে জানা যায়। এর মধ্যে রফিকা, খুশিদা এবং উম্মে সালমা এসেছেন মিয়ানমারের বুচিডং এলাকা থেকে। অন্যদিকে হাফসা ও তাসলিমা এসেছেন মুণ্ডু এলাকা থেকে। এক সঙ্গে এই গর্ভবতী মায়েদের সঙ্গে কথা হলে তারা স্পর্শকাতর নানা তথ্য জানান।

বাংলাদেশে আসা অধিকাংশ নারীকেই দেখা গেছে গর্ভবতী ও কোলে শিশু অবস্থায় এটি কেন? জানতে এর উত্তরে রফিকা বলেন, যারা আমাদের একবছর বা তার চেয়ে আরো আগে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তাদের অধিকাংশ নারীকেই বৌদ্ধ সন্ত্রাসী ও সেনারা পথে ধর্ষণ করেছে। তবে যারা গর্ভবতী থাকে তাদের ছেড়ে দেয়। ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে আমরা গর্ভবতী হয়ে এদেশে পাড়ি দিই!

খুর্শিদা বলেন, সে ৬ মাসের গর্ববতী। টানা দুদিন পর্যন্ত পাহাড়ি পথ হেটে পা প্রায় ফুলে গেছে। প্রসব ব্যাথা উঠছে কয়েকবার। গত ১০দিন আগে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। শুরুতে এখানে এসে খাবার ও কিছু সাহায্য পেলেও গত তিনদিন সে কিছুই পাচ্ছে না। যারা রাস্তার পাশে দৌড়াদৌড়ি করতে পারে এখন তারাই সব ত্রাণ ছিনিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। মুণ্ডু এলাকা থেকে আসা হাফসা জানান, দুই সন্তান নিয়ে এলাকা পার হওয়ার সময় উগ্রবাদী সেনাদের খপ্পরে পড়ে সে। গর্ভবতী জেনে তাকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে আর বাধা দেয়নি।

অন্যদিকে তাসলিমা জানালেন ভিন্ন গল্প। বছরখানেক আগে তার বড় বোন নাফ নদী হয়ে আসার পথে মিয়ানমার সীমান্তে সেনাদের হাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। বাংলাদেশে জীবন নিয়ে ফিরে মিয়ানমারে স্বজনদের এ খবর পৌঁছালে ভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকা পরিবারে অন্য সদস্যদের মাঝেও শোক নেমে আসে। বছরখানেক আগ থেকেই মিয়ানমারের মুণ্ডু ও বুচিডংয়েও এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তখন থেকেই নারীরা গর্ববতী হয়েই এ দেশে আসার কৌশল অবলম্বন করেন।সুত্র:; পূর্বপশ্চিম

পাঠকের মতামত

শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে পোস্ট, এসিল্যান্ড প্রত্যাহার

শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা ...

আলোচিত স্কুলছাত্রী টেকনাফের তাসফিয়া হত্যা: এবার তদন্ত করবে পুলিশ

চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের ...