প্রকাশিত: ১৬/০৮/২০১৭ ১১:৩৫ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:০৪ পিএম

শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর :

“প্রেম মানে না জাত-বেজাত” আর “ঘুমে মানে না ভাঙ্গা খাট” এ প্রবাদ বাক্যটি বাস্তবে রূপ নিতে সীতাকুন্ড থেকে পালিয়ে আসা প্রেমিক যুগল উদ্ধার হয়েছে ঈদগাঁওতে। স্বজনরা তাকে পুলিশের হেফাজতে দিয়েছে।

১৫ আগষ্ট বিকাল আড়াইটার দিকে ঈদগাঁও থেকে পালিয়ে কক্সবাজার চলে যাওয়ার সময় মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে স্বজনরা তাদের অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। আটক প্রেমিক সনাতন ধর্মাবলম্বী।

অন্যদিকে প্রেমিকা মুসলিম হলেও কপালে টিপ ও হাতে শাখা পরে ধর্মান্তরিত হয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, গত ৯দিন আগে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ভাটিয়ারী এলাকার ব্যবসায়ী হাজী নুরুল আলমের কনিষ্ট কন্যা শারমিন আক্তার টুম্পা একই এলাকার পান্না লাল মিত্রের পুত্র পাপ্পু মিত্রের হাত ধরে বাড়ী হতে পালিয়ে যায়।

ঐ দিনই শারমিনের ভাই শাহিন সীতাকুন্ড থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। ইত্যবসরে শারমিনের স্বজনরা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে তাদের সন্ধানে খোঁজ খবর নিতে থাকে।

কাতার ফেরত শাহিন ঈদগাঁও প্রবাসী এক বন্ধু মারফত জানতে পারে যে, পালিয়ে আসা প্রেমিক প্রেমিকা ঈদগাঁওতে অবস্থান করছে। তাদের সন্ধান পেতে শারমিনের সহোদর শাহিন খালাত ভাই নুরুল আবছারসহ ৪/৫ জন আত্মীয় দু’দিন আগে কক্সবাজারে এসে ঐ প্রবাসী বন্ধুর সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে।

এক পর্যায়ে মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে শারমিনের স্বজনরা নিশ্চিত হয় যে, তারা ঈদগাঁও বাসস্টেশনের কাছাকাছি অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার খুব সকালে ঐ ৪/৫ জন লোক ঈদগাঁও এসে বিভিন্ন অলিগলি ঢুকে নানা জনকে শারমিন ও পাপ্পুর ছবি এবং নাম-ঠিকানা দেখিয়ে তাদের স্বনাক্ত করার চেষ্টা করে।

এক পর্যায়ে দুপুর আড়াইটার দিকে মোবাইলে কথা বলতে বলতে তারা প্রেমিক প্রেমিকাকে ঈদগাঁও বাসস্টেশনে একটি সিএনজি ভাড়া করতে দেখে তাৎক্ষনিক তাদের ঘেরাও করে। পরে তারা সীতাকুন্ড থানার কর্তব্যরত অফিসারকে তাদের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি অবহিত করে।

সীতাকুন্ড থানার ওসি এ ব্যাপারে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করলে আইসি মো. খায়রুজ্জামানের নির্দেশে এএসআই মাঈনুদ্দীন পুলিশদল নিয়ে বাসস্টেশন থেকে প্রেমিক-প্রেমিকাকে তদন্ত কেন্দ্রের হেফাজতে নিয়ে আসেন।

এ ব্যাপারে শারমিনের ভাই শাহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি সঠিক কিনা এখনো তারা নিশ্চিত নন।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিক পাপ্পু মিত্র জানায় যে, গত দু’দিন আগে চট্টগ্রামের চট্টেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু ধর্মীয় মতে তাদের দু’জনের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে তার প্রেমিকা কপালে টিপ ও হাতে শাখা ব্যবহার করছে।

আটক প্রেমিক পাপ্পু মিত্র জানায়, সে তার পিতার বড় ছেলে। সে চট্টগ্রাম শহরের নাসিরাবাদ সাইন্টিফিক টেকনিক্যাল ইনষ্টিটিউট এর কম্পিউটার ডিপ্লোমা বিভাগের ৬ষ্ট ব্যাচের ছাত্র। আর তার প্রেমিকা ভাটিয়ারীর বিজয় সরণী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতক ১ম বর্ষের ছাত্রী। সে ৪ ভাই, ২ বোনের মধ্যে সবার ছোট।

এদিকে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রেমিকের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হবার খবরে উৎসাহী লোকজন তাদের দেখতে তদন্ত কেন্দ্রে ভিড় জমান।

ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ মো. খায়রুজ্জামান জানান, সীতাকুন্ড থানার অফিসার ইনচার্জের তথ্য মতে এ দু’জনকে বাসস্টেশন থেকে তাদের হেফাজতে আনা হয়।

এএসআই মাঈনুদ্দীন জানান, বিষয়টি যেহেতু আইন পর্যন্ত গড়িয়েছে সেহেতু আটক দুজনকে সীতাকুন্ড থানা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

সর্বশেষ জানা গেছে, আটক এ দুজনকে নিয়ে যেতে সীতাকুন্ড থানার এক কর্মকর্তা গতরাতেই (মঙ্গলবার) কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন।

পাঠকের মতামত

রামুর ফতেখাঁরকুলে উপ-নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে প্রচারনায় ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী

রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধি ৩ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া ...