প্রকাশিত: ২৩/০৮/২০১৭ ৯:৫১ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৪১ পিএম

আবদুর রহমান::
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক অত্যাচার ও নির্যাতন বন্ধ করতে মিয়ানমার সরকারকে সতর্ক করেছে রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)। বর্বরতা বন্ধ না হলে প্রতিশোধ নেওয়ারও হুমকি দিয়েছে তারা।সম্প্রতি ইউটিউবের মাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এআরএসএ নেতা আতাউল্লাহ আবু আম্মা জুনুনি নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে এ লড়াই একান্তই নিজেদের অধিকারের উল্লেখ করে এতে বাংলাদেশের দুর্নাম হবে না বলে আশ্বস্ত করেন সংগঠনের কমান্ডার ইন-চার্জ বলে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি।
১৮ মিনিটের বেশি ওই ভিডিও বার্তায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকার দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের উপর সেদেশের সেনা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ, হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও পোড়াও অব্যাহত রেখেছে বলে দাবি করেন।
বিশ্বের নেতাদেরকে উদ্দ্যেশে বলেন, সেনারা মিয়ানমার রাশিডং গত ২০ দিন ধরে রোহিঙ্গাদের ঘিরে রেখেছে এটা খুবই দুঃখজনক। এমনকি সেনাদের সঙ্গে রাখাইনরা রয়েছে। এতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চলাফেলা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে তাদের না খেয়ে মরতে হচ্ছে। এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আশা করি আন্তজার্তিক নেতারা এ বিষয়ে মিয়ানমার উপর চাপ প্রয়োগ করবে। তাই প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশেকারী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহযোগিতার করার জন্য অনুরোধ জানান প্রতিবেশি দেশকে।তবে এআরএসএর (আরসা) সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে তিনি জানান, মিয়ানমার শাসকদের নির্যাতন থেকে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের মুক্ত করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।

তিনি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের উপর ৭০ বছরের বেশি ধরে জালেম মিয়ানমারের সরকার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। সেটা আপনারা জানেন। এমনকি মানুষ হিসেবে আমাদের যে অধিকার রয়েছে, তা ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের উপর দয়া করবেন আশাকরি। আর মিথ্যাবাদী মিয়ানমারের সরকারের কোন কথা বিশ্বাস করবেন না।’
বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একাধিক সূত্র জানায়, ক্যাম্পগুলোতে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটির লোকজন রয়েছে। এছাড়া হারকাত আল-ইয়কিন নামে পরিচিত রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী সংগঠন চলতি বছরের মার্চ মাসে নাম পরিবর্তন করে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) নামে আত্মপ্রকাশ করে। এর প্রধান আতাউল্লা। আতাউল্লার জন্ম পাকিস্তানে। তার বাবা রাখাইন রাজ্য থেকে ধর্মীয় নিপীড়নে পাকিস্তানে অভিবাসী হয়েছিলেন। পরে তার পরিবার সৌদি আরবের মক্কায় বসবাস শুরু করে এবং সেখানেই আতাউল্লা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হন।
এদিকে চলতি বছরে রোববার,০৯ জুলাই টেকনাফে দোস মোহাম্মদ (৩৫) নামে এক রোহিঙ্গাকে আটক করে থানা পুলিশ। সে মিয়ানমার বিচ্ছিন্নতাবাদি রোহিঙ্গা সংগঠন (আল অ্যাকিন) যার নতুন নাম ‘আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আরমি’র সদস্য। সে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরের ৮৭৮ নং সাইডের সি ব্লকের ১ নং রুমের বাসিন্দা মৃত জমিল আহমদের ছেলে। বাংলাদেশে ওই সংগঠনের অর্থ যোগানদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিল তিনি। তার বিরুদ্ধে উখিয়া ও টেকনাফ থানায় হত্যা ও অপহরন মামলা রয়েছে। সে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তির সভাপতি আবু ছিদ্দিক বলেন, ‘উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী সংগঠন সংগঠনের প্রায় দেড় শতাধিকের বেশি সদস্য রয়েছে। তারা এপার-ওপারে যাতায়াত করে থাকে। এর মধ্যে ওই সংগঠনের এক নেতা দোস মোহাম্মকে আটক করে পুলিশ।’ তার বাবা মো. জমিন আহম্মদ সে সৌদি প্রবাসী। সেখানে অবস্থান করে অর্থ পাউন্ড করে তার ছেলেকে অর্থ যোগান দেন। আর দোস সে টাকা বিদ্রোহী সংগঠনের লোকজনকে মদদ করে। এমনকি সে ওই সংগঠনকে খবার সামগ্রী পাচার করে থাকতো। বিষয়টি আমি বিভিন্ন আইনশৃঙ্কলাবাহিনীকে অবহিত করেছি।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন খান বলেন, ‘আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি সংগঠনের নাম আমি কখনো শুনি নাই। তবে এপারে রোহিঙ্গাদের বিদ্রহেী সংগঠনের কোন তৎপরতা নেই। আর এ ভিডিও স¤পর্কে জানা নেই রোহিঙ্গারা যাতে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে না পরে সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।’

সুত্র-সমকাল

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গাদের অর্থায়নে কাটছাঁট করছে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন খাতে আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধের পর বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন ...

মিয়ানমারে আবারো ভূমিকম্প

গত ২৮ মার্চের শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে আবারও আঘাত হেনেছে মাঝারি ভূমিকম্প। রোববার (১৩ এপ্রিল) ...

ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান সৌদির

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান ...