
মোঃ ইকবাল হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কক্সবাজার জেলা পুলিশ। তিনি কোন মন্ত্রী, এমপি অথবা দেশের বড় কোন রাজনীতিক দলের কোন নেতা নন। দেশ জাতির নিরাপত্তা ও জানমালের রক্ষায় দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য। কক্সবাজার জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে যোগদানের পর থেকেই মানবতার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে কক্সবাজারের জনপথের খ্যাতনামা এই জেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে সু-পরিচিত হতে শুরু করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন।
তবে গত বছর ঠিক এমন দিনেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে সরকারী চাকুরী বদলীর সুবাদে কক্সবাজারে এসেছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী এই মুহূর্তে জনপ্রিয় এই পুলিশ কর্মকর্তাকে কতটুকু মনে রেখেছেন
জানাচ্ছেন, আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকর্মী তারেক আজিজ।
দিনটি ছিল শুক্রবার, ২৪ অগাষ্ট ২০১৮ইং। বিকাল ঠিক ৪:০০টায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে চলে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। শতশত তরুন চোখের অশ্রজ্বলে নিরব ভূমিকায় এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল। ঐদিন সবার কাছ থেকে ভালবাসাময় অশ্রুজ্বলে বিদায় নিয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন। আজ ঠিক এক বছর পূর্ণ হলো।
তবে কি সময়ের বিবর্তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী ভুলে গেছে? কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন এখনও অনেক জনপ্রিয় একটি নাম ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর কাছে। তরুণদের খুব প্রিয়জন ছিলেন তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাদক নির্মূলে তার অবদান ছিল অতুলনীয়। তার এই চলে যাওয়া যেন, এখনও কাঁদছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। জেলার বিভিন্ন¯’ানের সামাজিক,রাজনীতিক,সুশীল,পেশাজীবী,সাংবাদিক সমাজ সহ- বিভিন্ন মহলের কাছে এখনও তিনি অনেক জনপ্রিয়।
প্রায় দুই হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তন আর ৪০ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠির ঐতিহ্যবাহী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত ঐতিহ্যগত দাঙ্গা, যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্গমতা ভৌগলিক অবস্থানসহ নানান কারণে আইনশৃঙ্খলার দিকদিয়ে খুবই র্স্পশকাতর একটি জেলা ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া । তিনি এই জেলায় যোগদানের পর থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ পুলিশের হাতের নাগালে চলে এসেছিল।
তৎকালীন সময়ে জেলা থেকে মাদক নির্মূলে প্রাথমিক পর্যায়ে এসপি মিজানুর রহমান এর সাথে প্রত্যেক উপজেলায় গিয়ে সুশীল সমাজকে সাথে নিয়ে মাদক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভা-সেমিনার শুরু করতেন। কিন্তু‘ মাদক ব্যবসায়ীরা যখন পুলিশের কথা তোয়াক্কা না করে তাদের কার্যক্রম চালাতে থাকেন ঠিক তখনই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতেন। এসপি মিজানের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বহু শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আত্নসমর্পণ করার মতো সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। যা এখনও কক্সবাজারে মাদক ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পন করার মতো সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর কাছে কতটা জনপ্রিয় কয়েকজন তরুণদের মুখের কথাই প্রমান করে। ক্লিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রধান আবু বক্কর বলেছেন এখনও নাকি শতশত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনেক তরুণের কাছে আদর্শ একটি নাম ইকবাল হোসাইন। তার কথায় স্যারকে অনেক মনে পড়ে। আগে যখন স্যার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছিল তখনকার সময়টা তরুণদের কাছে উৎসব মুখর পরিবেশ ছিল সবসময়। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তরুণরা লিপ্ত থাকায় অন্যায়মূলক যেকোন কাজ থেকে বিরত থাকতো।
তাছাড়া ড্রিম ফর ডিজএ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা মুন্না আজিজ বলেন “আমি চাই স্যার আবার আসুক ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে”।
সংগঠন প্রিয় বর্তমানে জেলার ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত এডভোকেট লোকমান হোসেন বলেন “ইকবাল স্যার ও মিজান স্যার এই দুজন মিলে তরুণদের একটা স্বপ্নের মধ্যে সারাক্ষণ নিয়োজিত রাখতো। যে স্বপ্নগুলো তাদের কখনও খারাপ পথে যাওয়ার জন্য সুযোগ সৃষ্টি হতো না। শুধু আমি কেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী সবাই তাদের মনে রাখবে সারাজীবন।”
এছাড়াও সাবেক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বর্তমানে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এর নেতৃত্বে সামাজিকভাবে নানান কর্মকান্ডে জেলা পুলিশের ভূমিকা ছিল জেলাবাসীর কাছে প্রশংসিত ও মনে রাখার মতো।
পাঠকের মতামত